হাসপাতালে ভর্তি আসামি, পুলিশ বলছে নাটক

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২৩:০৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর পল্লবীর সাংবাদিক আবাসিক এলাকার গেটে একটা ছোট্ট চায়ের দোকানের মালিক মামুন মিজি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মিজির স্ত্রী শারমিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তার স্বামী জ্ঞান হারালে হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।

শুক্রবার রাতে মানুম মিজির গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, তার গায়ে একটা থাবাও দেয়া হয়নি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মিজি অসুস্থতার নাটক করেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, মিজির নামে মামামারির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। পরে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে বুকের ব্যাথার নাটক করছে। প্রথমে তাকে স্থানীয় কিংস্টন হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা বলেন কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তার অসুস্থতার কথা বলায় আবার সোরওয়াদি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। সেখানেও চিকিৎসকরা ইউসিজি করার পরে একই কথা বলেন।

তারপরেও আমরা হাসপাতালে ভর্তি করে রাখছি। শনিবার সকালে কোর্টে চালান করে দিবো বলে জানান এই কর্মকর্তা।

মিজির স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, গত ১১ সেপ্টম্বর এলাকার কয়েকজন মহিলারা ঝগড়া করেছে। তার মধ্যে একজন মিজির বোন ছিলেন। ঝগড়া করে না পেরে আমার স্বামীর দোকানে এসে মারপিট করে। পরে থানায় গিয়ে জিডি করতে চাইলে পুলিশ জিডি নেননি। এরপর রানু অরফে রিনা নামের এক নারী থানা থেকে এসআই জহিরকে আনেন। ওই দিন হুমকি-ধামকি দিয়ে চলে যায় জহির।

শুক্রবার দুপুরে আমরা স্বামী-স্ত্রী মিলে দোকান খুলি। পরে আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায় এসআই জহির। ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় সে সুস্থ ছিলেন। ‍দুপুরে থানায় খাবার খাওয়ায়ছে পুলিশে। বিকালে খবর পায় বুকে ব্যাথা উঠেছে। আমি থানায় যেতে যেতে পুলিশে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

পরিবারের অভিযোগ, পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে মিজি এখন পুলিশের তত্ত্বাবধানে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অচেতন অবস্থায় আছে। ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় রিমান্ডে নেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।

স্থানীরা জানান, মিজিকে পল্লবীর কিংস্টন হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। দিন কয়েক আগে ওর বোনের সাথে আরেক মহিলার হাতাহাতি হয়। যদিও ওর বোনের নামে এলাকায় নানা অভিযোগ আছে। তবে এ নিয়ে ওরা চার ভাই-ই বিব্রত। সেই হাতাহাতির পর এক মহিলা এসে হঠাৎ করে মামুনের দোকানে এসে লোহার পাইপ দিয়ে কয়েকজন সাংবাদিকের সামনেই মামুনকে বেধড়ক পিটিয়ে যায়।

তারা বলছেন, এ ব্যাপার মামুন পল্লবী থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করে। কিন্তু সেটি আমলে না নিয়ে উল্টো সেই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে আজ ধরে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে পুলিশি নির্যাতনে এখন সে অচেতন।

জানা গেছে, শরিয়াতপুর নড়িয়া থানার মামুন মিজি তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। আর সাংবাদিক আবাসিক এলাকার গেটে ১০ থেকে ১৫ বছর চায়ের দোকান চালান।

পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহির বলেন, মিজির বোন ও তার ছেলে মেয়ের নামে এলাকায় অনেক অভিযোগ আছে। এছাড়া তারা মাদক ব্যবসায়ী। তাদের নামে একাধিক মাদক মামলা আছে। কিন্তু তার নামে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কিন্তু মারামারি ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

থানায় মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে এসআই জহির বরেন, এটা মিথ্যা কথা। এখানে মারপিট করার কোনো সুযোগ নাই। নিজেদের বাঁচানোর জন্য এসব কথা বলছে তার পরিবার।

(ঢাকাটাইমস/২৩সেপ্টম্বর/এএইচ/কেএম)