‘চট্টগ্রামের উন্নয়নের স্বার্থে ডিসির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে’

প্রকাশ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০:৩৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর-জেলা ইউনিট কমান্ডের উদ্যোগে চট্টগ্রাম জেলার সৎ, দক্ষ, সাহসী ও উন্নয়নমুখী জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে স্বার্থান্বেষী মহলের চক্রান্ত, অপপ্রচারসহ ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শনিবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন সমাবেশ, প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। 

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, পাহাড়খেকো, দখলবাজ, আইন অমান্যকারী, দুর্নীতিবাজ ও অপশক্তির আতঙ্ক চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। ডিসি হিসেবে তিনি চট্টগ্রামে যোগদানের পর থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গতিশীল ও দৃশ্যমান করতে সততা, দক্ষতা ও সাহসিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি চট্টগ্রাম দরদী ও সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অকৃত্রিম বন্ধু। ভূমিদস্যু পাহাড়খেকো ও লুটেরার দল চট্টগ্রামের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে যোগ্য জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। স্বার্থান্বেষী কুচক্রীমহল জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালিয়ে তাকে চট্টগ্রাম থেকে বদলির পাঁয়তারা করছে। বর্তমান ডিসিকে হারালে চট্টগ্রামের উন্নয়ন অবশ্যই বাধাগ্রস্ত হবে। তার মত জেলা প্রশাসক পাওয়া চট্টগ্রামবাসীর জন্য গৌরবের। তার ভেতরে-বাইরে আমলাসূলভ কোন আচরণ নেই। বিগত দিনের জেলা প্রশাসকেরা যে কাজগুলো করতে সাহস করেনি তা বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান সাহসিকতার সাথে করছে। চট্টগ্রামকে ধ্বংস হতে দেয়া যাবে না। চট্টগ্রামের চলমান উন্নয়নের স্বার্থে সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জনগণকে সাথে নিয়ে ডিসির বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। ডিসির বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করছে বা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তে ব্যবস্থা করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট উদাত্ত আহবান জানান বক্তারা। 

বক্তারা আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ডিসির উদ্যোগে উত্তর কাট্টলী মৌজার প্রায় ৩০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠা অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এ স্থানে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও যাদুঘর নির্মাণে ডিপিপি প্রস্তুতের কাজ চলছে। ডিসির নেতৃত্বে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে ভূমিদস্যু ও পাহাড়খেকোদের কবল থেকে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার ৩ হাজার ১’শ একর সরকারি খাস জমি উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। একইসাথে চট্টগ্রামের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করে এখানে কেন্দ্রীয় কারাগার স্থাপন ও নাইট সাফারি পার্কসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তৈরি করতে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ চলছে। চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পরীর পাহাড় থেকে ২ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ও নগরীর বিভিন্ন ঝুকিঁপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশের ৫৮৭টি অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করেন তিনি।

বক্তারা আরও বলেন, সম্প্রতি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এক মোনাজাতকে কেন্দ্র করে মিথ্যা তথ্যেরভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর কারণে তাকে জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ওই দিন মুনাজাতে তিনি একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। এ ঘটনা অনাকাঙ্খিত, অনভিপ্রেত এবং দুঃখজনক। তরুণ, চৌকষ সরকারি কর্মকর্তা মমিনুর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করেন। তার সাথে সাক্ষাতে মুক্তিযোদ্ধারা তা অনুভব করেন। চট্টগ্রামের জনগণের জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করেন। প্রতিদিন অসংখ্য লোকের অভিযোগ শুনে এবং সমাধান দেয়ার চেষ্টা করেন। তিনি সরকারি ভূমি উদ্ধারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। একটি স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল এই জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে।

বক্তারা বলেন, এক শ্রেণির ভূমিদস্যুর দল পাহাড় কেটে বন ও গাছপালা উজাড়ের মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করছে। রাতারাতি পাহাড় কেটে যারা অবৈধভাবে আবাসন তৈরি করছে কিংবা পাহাড় বিনষ্টের  ইন্ধন দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বনভূমি ধ্বংস করতে দেয়া হবে না। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদের সভাপতিত্বে মহানগরীর সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাস ও জেলার সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম আলাউদ্দিনের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ ও মানববন্ধন সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন- চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দিন, জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল দুলু, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, জেলা সংসদের প্রাক্তন কমান্ডার ও জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চিশতী, মহানগর ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম (যুদ্ধাহত), জেলা ইউনিটের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ মাহমুদ ইসহাক, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্যতম সাক্ষী বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী নুরুল আবছার, আকবর শাহ থানার ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা খায়রুল বশর, সাতকানিয়া উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের এলএমজি, মিরসরাই উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কবীর আহমেদ, চসিক কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজী, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কামরুল হুদা পাভেল, সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল, বন্দর শ্রমিক নেত্রী নুর জাহান বেগম প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৪সেপ্টেম্বর/এলএ)