ছাত্রজীবনে ফাঁকি দেওয়া ট্রেনের ভাড়া পরিশোধ করলেন ৭০ বছর বয়সী নওশের আলী

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:৩৭ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:৪৯

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ছাত্রজীবনে চার বছর ট্রেনে বিনা টিকিটে কলেজে যাতায়াত করেছেন নওশের আলী। কখনো টাকা না থাকার কারণে আবার কখনো হেঁয়ালি করে টিকিট কাটা হয়নি। সেই চার বছরের ট্রেনের টিকিটের টাকা বৃদ্ধ বয়সে পরিশোধ করলেন ৭০ বছর বয়সী নওশের আলী।

তিনি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বাজার বেতেঙ্গা গ্রামের অবসর প্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা।

শনিবার রাজবাড়ী স্টেশনের স্টেশন মাস্টার তন্ময় কুমার দত্তের হাতে তিনি ৫ হাজার টাকা দিয়ে দায় মুক্তি নেন। অবশ্য এখন এই ভাড়া পাঁচগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তন্ময় কুমার।

জানা যায়, নওশের আলী ১৯৬৯ সালে গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন। এরপর এইচএসসিতে ভর্তি হন রাজবাড়ী সরকারি কলেজে। সেখান থেকে ১৯৭১ সালে এইচএসসি পাশ করে একই কলেজে ডিগ্রীতে ভর্তি হন। নওশের আলী ছাত্র জীবনের চার বছর বাড়ি থেকে ট্রেনে এসে রাজবাড়ী কলেজে ক্লাস করতেন। তখন বিনা টিকিটে ট্রেনে চরতেন। এরপর ১৯৭৫ সালে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদ থেকে ২০১০ সালে অবসর গ্রহণ করেন।

নওশের আলী বলেন, ছাত্র থাকার সময় যে কয়দিন কলেজে এসেছি সব দিনই বিনা টিকিটে এসেছি। হঠাৎ আমার মনে হল ছাত্র থাকার সময় পকেটে পয়সা ছিল না। কিন্তু এখন আমার টাকা আছে। তাই বিবেকের দংশনে সেই টিকিটের টাকা পরিশোধের চিন্তা মাথায় আসে। এ জন্য শনিবার দুপুরে গিয়ে স্টেশন মাস্টারের কাছে ৫ হাজার টাকা দিয়ে তাদের কাছ থেকে দায়মুক্তি নিয়ে এসেছি।

নওশের আলীর সহকর্মীরা বলেন, নওশের আলী যখন ছাত্র ছিলেন তখন ট্রেন ছিল এ অঞ্চলের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। তবে নওশের আলী এটা একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বলা যায়।  

স্টেশন মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত বলেন, নওশের সাহেব এসে জানালেন ছাত্র জীবনে তিনি বিনা টিকিটে ট্রেনে কলেজে যাতায়াত করেছেন। সেই টাকা এখন দিতে চান। তিনি ৫ হাজার টাকা দেন। আমরা তাকে পাঁচ হাজার টাকার টিকিট কেটে দিয়েছি।

(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/এসএম)