সরকারি সব লেনদেন ‘নগদ’-এ করার পরামর্শ সংসদীয় কমিটির

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০:৫১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস সংক্রান্ত সরকারের সব ধরনের লেনদেন ‘নগদ’ –এর মাধ্যমে পরিচালনার পরামর্শ দিয়েছে সংসদীয় কমিটি। এই সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত ডাক বিভাগের এই ডিজিটাল সেবাটিকে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

রবিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ পরামর্শ দেওয়া হয়।

কমিটির আগের বৈঠকে ডাক বিভাগের সঙ্গে নগদের কী সম্পর্ক সেটি জানতে চাওয়া হয়। নগদের কার্যক্রমের তথ্য-উপাত্ত কমিটির কাছে উপস্থাপনের জন্য বলা হয়। বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উপস্থাপিত প্রতিবেদনে ‘নগদ’-এর সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ডাক বিভাগের সহায়তায় পরিচালিত নগদ সম্পর্কে বিরূপ তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বলে বৈঠকে বলা হয়। আর সংসদীয় কমিটির সদস্যরা তাদের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে। এছাড়া নগদ থাকায় মোবাইল ব্যাংকের একচেটিয়া প্রভাব বন্ধ হয়েছে। যাতে গ্রাহক সুবিধা পাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তারা।

সংসদীয় কমিটির সদস্যরা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসটিকে জনপ্রিয় করে গ্রাহকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার পরামর্শ দেন। বয়স্ক ভাতা, শিক্ষা বৃত্তি ও উপবৃত্তিসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সব ধরনের ভাতা নগদের মাধ্যমে প্রদানের পরামর্শ দিয়েছে।

এ বিষয়ে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রের উন্নয়নের কথা বিবেচনায় রেখে দেশের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ-এর মাধ্যমে সরকারের সব লেনদেন পরিচালনার পাশাপাশি জনগণের কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সেই সঙ্গে নগদ-এর নাম ভাঙিয়ে কোনো প্রকার অসৎ উপায় অবলম্বন করলে কঠোর হস্তে দমন করার জন্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের উপস্থাপিত তথ্য মতে, নগদ-এর গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ছয় কোটি ৬৮ লাখ। উদ্যোক্তার সংখ্যা দুই লাখ ৬৭ হাজার। পরিবেশক সংখ্যা ২০৮টি। প্রায় ৯৫৩ কোটি টাকা দৈনিক লেনদেন হয়। প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি ছয় হাজার ২৩১ জন। পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি দুই লাখ ৫৫ হাজার। দেশব্যাপী উপজেলা পর্যায়ে ৬০২টি নগদ সেবা কেন্দ্র। দেশব্যাপী ৪৬ ‘নগদ’ সেবা সেন্টার রয়েছে।

ডাক অধিদপ্তরের সঙ্গে রাজস্ব শেয়ারের মাধ্যমে পরিচালিত সরকারি বিভিন্ন নিয়ম মেনে নগদ ডাক বিভাগকে ৫১ শতাংশ রাজস্ব শেয়ার প্রদান করছে।

 

প্রতিবেদনে জানানো হয়, নগদ থেকে ডাক বিভাগ মোট ৪ কোটি ৫৯ লাখ ১০ হাজার ৪৫৫ টাকা রাজস্ব পেয়েছে। ডাক বিভাগ ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সাত লাখ ৯৩ হাজার ২৬৬ টাকা, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এক কোটি ১৯ লাখ ২২ হাজার ৩১১ টাকা, ২০২০-২১ অর্থ বছরে তিন কোটি ৩১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭৮ টাকা রাজস্ব পেয়েছে।

নগদ বর্তমানে ১৭ ধরনের সেবা প্রদান করছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। সেগুলো হলো-ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউট, সেন্ড মানি, মার্চেন্ট পেমেন্ট, ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট, করোনা টেস্টের ফি, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফি প্রদান, অ্যাড মানি (ব্যাংক ও কার্ড থেকে), জিটুপি, মোবাইল রিচার্জ, আয়কর প্রদান, ডোনেশান, ইনস্যুরেন্স প্রিমিয়াম পেমেন্ট, ইএমআই কালেকশন, ই-কমার্স পেমেন্ট, রেলওয়ে টিকিট ফি পেমেন্ট ও ইন্ডিয়ান ভিসা ফি পেমেন্ট।

সংসদীয় কমিটির সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ গ্রহণ করেন তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, নুরুল আমিন, মনিরা সুলতানা এবং অপরাজিতা হক।

(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/কেএম)