মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় অদ্ভুত কারণে বেঁচে গেলেন আসামি

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮:০৪ | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮:০৬

ঢাকা টাইমস ডেস্ক

সালটা ১৯৯৯। আমেরিকার আলাবামা অঞ্চলের ঘটনা। সন্দেহের বশে তিন সহকর্মীকে খুন করে বসেন পেশায় ট্রাকচালক অ্যালান ইউজিন মিলার। অ্যালান সমকামী- কর্মক্ষেত্রে বাকি সহকর্মীদের মধ্যে এমন কথাই ছড়িয়ে দিয়েছিলেন খুন হওয়া ওই তিনজন। রাগে তিন কর্মীকেই মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন অ্যালান।

যেই কথা সেই কাজ। টেরি জার্ভিস, লী হোল্ডব্রুকস এবং স্কট ইয়ান্সি নামের তিন সহকর্মীকে বুকে গুলি করে খুন করেন অ্যালান। গ্রেপ্তার হন তিনি। আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টে এই খুনের মামলা ওঠে। সেই মামলার রায় হয় গত ২২ সেপ্টেম্বর। আদালতের রায়ে অ্যালানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডের এই শাস্তি দেওয়ার পদ্ধতিও ভয়ানক। আদালত থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়, অ্যালানের শরীরে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে তাকে মেরে ফেলা হোক। কিন্তু ইঞ্জেকশন নিতে ভয় পান অ্যালান। তাই অন্য কোনো পদ্ধতিতে তাকে হত্যা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু অ্যালানের অনুরোধ রাখেনি আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট। বরং মৃত্যুর আগে তার শেষ আহারে যেন কোনো ত্রুটি না থাকে, সেদিকে বেশি নজর রেখেছিলেন এগজিকিউশন দলের সদস্যরা।

ইঞ্জেকশন দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে অ্যালানকে মাংসের লোফ, চাকওয়াগন স্টেক, কমলালেবুর রস, চিজ, আপেল, আলু, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ম্যাকারনিসহ আরও অনেক কিছু খাওয়ানো হয়। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ২২ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার আগে অ্যালানকে শাস্তির নির্দেশ ছিল। বাকি ছিল মাত্র তিন ঘণ্টা।

খাওয়ানোর পর অ্যালানকে চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয় প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার। তার শরীরে সূচ ফোটানোর জন্য শিরা খুঁজে পাওয়া যায়নি। বহু চেষ্টা করার পরেও শিরা খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন সকলে। এদিকে সাজার সময় যায়। মৃত্যুদণ্ড থেকে বেঁচে যান অ্যালান।

অ্যালান জানান, ২০১৮ সালে তিনি নাইট্রোজেন হাইপক্সিয়া পদ্ধতির মাধ্যমে মৃত্যু চেয়েছিলেন। এই পদ্ধতিতে অক্সিজেনের বদলে শুধু নাইট্রোজেন গ্যাস ভর্তি বদ্ধ ঘরে কোনো মানুষকে আটকে শ্বাসরুদ্ধ করে মারা হয়। অ্যালানের দাবি, হেফাজতে থাকাকালীন সেলের ঘর থেকেই একটি কাগজে লিখে তিনি এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন।

কিন্তু আলাবামা জেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অ্যালানের তরফ থেকে এরকম কোনো অনুরোধ পাননি তারা। পুলিশের দাবি, মৃত্যুদণ্ড এড়াতে নানা ছলচাতুরি করতেন অ্যালান। এই আসামি বর্তমানে জেলে তার আগের ঠিকানায় ফিরে গেছেন। মামলার নতুন রায় না আসা পর্যন্ত তিনি সেখানেই থাকবেন।

(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/এএইচ)