জামায়াত-আওয়ামী লীগের পরকীয়া চলছে: টুকু

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:০৯ | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জামায়াতে ইসলামি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে পরকীয়া চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি বলেছেন, জামায়াতও উর্দু, আওয়ামীও উর্দু। দুটো একসঙ্গে মিলবে ভালো। কেননা উনারা জামায়াতের নিবন্ধন ক্যানসেল করেন। কিন্তু বেআইনি ঘোষণা করেন না। আওয়ামী লীগ জামায়াতের সঙ্গে তলে তলে বন্ধুত্ব করে।

সোমবার বিকালে রাজধানীর হাজারীবাগে সিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের লাগবাগ, হাজারীবাগ, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি থানা বিএনপি এর আয়োজন করে।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং, গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে দলীয় নেতা নুরে আলম, আব্দুর রহিম, শাওন প্রধানের হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগরীর ১৬টি স্পটে ধারাবাহিক সমাবেশের অংশ হিসেবে এই প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন হচ্ছে।

ইকবাল হাসান টুকু বলেন, আওয়ামী লীগের অনেকের মুখে একটা বুলি হয়ে গেছে। বিএনপি-জামায়াত, বিএনপি-জামায়াত। আমি বলছি এখন সময় এসেছে, আওয়ামী-জামায়াত, আওয়ামী জামায়াত বলার। জামায়াতও উর্দু, আওয়ামীও উর্দু। দুটো একসাথে মিলবে ভালো। কেননা উনারা জামায়াতের নিবন্ধন ক্যানসেল করেন। কিন্তু বেআইনি ঘোষণা করেন না। তাহলে কি আমি বলব, ওনাদের (জামায়াত-আওয়ামী লীগের) পরকীয়া প্রেম চলছে? আমাদের বলা হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত, আর আপনারা আমাদের বলেন, যুদ্ধবিরোধী দল। আমিও স্বীকার করলাম। কিন্তু নিবন্ধন বাতিল করলেন, বেআইনি ঘোষণা করলেন না। তার অর্থ আওয়ামী লীগ জামায়াতের সঙ্গে তলে তলে বন্ধুত্ব করে। সেজন্য বাতিল করে না। তাই আজকে থেকে আওয়ামী-জামায়াত হবে, বিএনপি জামায়াত আর হবে না।

তিনি বলেন, আরেকটা কথা আওয়ামী লীগের লোকজন বলতে বলতে মুখ দিয়ে ফেনা তুলে ফেলে। বলতে বলতে এখন মুখ দিয়ে থুথু বের হয়ে যায়। কী বলে? উন্নয়ন, উন্নয়ন, উন্নয়ন। আমি উন্নয়ন সম্পর্কে কিছু বলব না, আমরাও উন্নয়ন চাই। আমরাও উন্নয়ন করেছি। এদেশে যা কিছু উন্নয়ন হয়েছে শহীদ জিয়া বীজ বপন করে গেছেন। তার উপরে আজকে বাংলাদেশ দাড়িয়ে আছে। ওনারা উন্নয়ন উন্নয়ন বলে।

‘কিন্তু এই দেশের মন্ত্রিপরিষদ সচিব ভদ্রলোক নাকি তাবলিগ করেন। অন্যায় দেখতে দেখতে অসহ্য হয়ে গেছেন। তিনি কয়দিন আগে অফিসারদের মিটিং-এ বললেন, আমাদের যে বহিঃসম্পদ বিভাগ আছে তারা চুরি করার জন্য বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে আসে। ঋণ নিয়ে এসে চুক্তি করে প্লানিং কমিশনে পাঠায়, তারা সেটা পাস করে দেয়। পরে সেই ঋণ আমাদের গলার ফাঁদ হয়ে যায়। এটা আমার কথা না, বাংলাদেশের কেবিনেট সচিবের কথা, যিনি এখনও চাকরিতে বহাল আছেন। আমরা গিবত করতে চাই না, তোমার কেবিনেট সেক্রেটারি বলে তোমার উন্নয়ন মানে বাংলাদেশের মানুষের গলার ফাঁদ’—যোগ করেন তিনি।

দেশটাকে আজকে কোথায় নিয়ে গেছে প্রশ্ন করে ইকবাল হাসান টুকু বলেন, আজকে ওসির অনুমতি নিয়ে আমরা মিটিং করছি। কাল রাত থেকে এখানে না ওখানে, ওখানে না ওখানে। হায়রে আমার বাংলাদেশ। আমি মিটিং করব, আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আর আজকে ওসির অনুমতি নিয়ে মিটিং করতে হবে। আর বলে দেশে নাকি গণতন্ত্র আছে। গণতন্ত্রই যদি থাকতো তাহলে আমাকে ওসির অনুমতি নিয়ে কেন মিটিং করতে হবে।

এদিন বিএনপির সমাবেশ শুরুর আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আধা ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে গোটা এলাকায় আতংক বিরাজ করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

মহানগর দক্ষিণ বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম সিরাজের সভাপতিত্বে, কেএম জোবায়ের এজাজ ও আরিফা সুলতানা রুমার পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপি নেতা রফিকুল আলম মজনু, রবিউলি আলম রবি, ইউনূস মৃধা, যুবদল নেতা গোলাম মাওলা শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ইয়াসিন আলী, ধানমন্ডি থানা বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুবদল নেতা বাবুল রানা, সাঈদ হাসান মিন্টুসহ বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ অংগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/ইএস)