‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর অন্ধকার কাটাতে উদিত নক্ষত্রের নাম শেখ হাসিনা’

প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৩০

জাফর আহমেদ, ঢাকাটাইমস

স্বাধীনতার স্তপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে অন্ধকার যুগে নিয়ে যায়। বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশের সেই আঁধার কাটাতে আলোর দিশারী হিসেবে উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে উদিত হন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে মঙ্গলবার ঢাকা টাইমসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে একথা বলেন ক্ষমতাসীন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন।

সাক্ষাৎকারে এস এম কামাল বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিন, সাম্প্রতিক রাজনীতি ও আগামী জাতীয় নির্বাচন, শেখ হাসিনা সরকারের দেশজুড়ে ব্যাপক উন্নয়নসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশের মানুষ ভাত ও ভোটের অধিকার পেয়েছে। আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছে। আকাশ সমান যার অর্জন। পিতার স্বপ্ন বুকে নিয়ে শত বাধা পেরিয়ে সোনার বাংলা গড়তে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বার বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসলেও দমে যাননি।’

‘শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলে সমস্ত ষড়যন্ত্রের জাল ভেদ করে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। নিজের দল আওয়ামী লীগ ও সরকারের হয়ে উঠেছেন বিকল্পহীন। শেখ হাসিনা এমন একজন নেত্রী যিনি শত সমস্যা, বাধা, বিপত্তিতেও সকলের আস্থার প্রতীক। শেখ হাসিনা এদেশে না এলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যস্তবায়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি কিছুই হতো না।’

এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে অন্ধকার যুগে পরিণত করেছিল। মানুষ যখন দিশেহারা, যখন সেনা-বিমান অফিসারদের স্ত্রী-সন্তানদের আহাজারি, আর্তনাদ আর আওয়ামী লীগের সাড়ে চার লাখ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়। মানুষের ভোটের অধিকার ছিন্ন করে বাংলাদেশের সংবিধানকে বুটের তলায় পিষ্ট করে দেশকে পাকিস্তানের ধারায় নিয়ে গিয়েছিল জিয়াউর রহমান।’
বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশ, এক অন্ধকার বাংলাদেশ। সেই অন্ধকার যুগে আলোর দিশারী হিসাবে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো উদিত হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশের মানুষ ভাতের ও ভোটের অধিকার পেয়েছেন। গণতান্ত্রিক অধিকার পেয়েছেন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় ফিরে গেছে। আজ বাংলাদেশের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। যে বাংলাদেশ ছিলো ক্ষুধা, দারিদ্র, দুর্বৃত্ত সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বাংলাদেশ। বাংলাদেশে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিলো। বিশ্বের দরবারে পাচঁবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
‘শেখ হাসিনা তার সততা সাহসিকতা দেশপ্রেম, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। বাংলাদেশ বিদ্রুপ করে ষড়যন্ত্র করে বলা হয়েছিল তলাবিহীন ঝুড়ির  বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা সেই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত করেছেন।’

এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যেমন বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তেমনি তার কন্যা শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য আজকে শেখ হাসিনা লড়াই করে এগিয়ে যাচ্ছেন। ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্থায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, খাদ্যে স্বনির্ভরতা, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ অবকাঠামো, যোগাযোগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বাণিজ্য, আইসিটি এবং এসএমই খাতে এসেছে ব্যাপক সাফল্য।’

‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি সম্পাদন, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতিসহ জাতীয় জীবনের বহুক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। বাংলাদেশ যা কিছু অর্জন হয়েছে বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার হাত ধরেই হয়েছে।’

জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মুখোমুখি অবস্থানে। এতে করে আতঙ্ক বাড়ছে সাধারণ জনগণের মধ্যে। বিএনপির সঙ্গে সঙ্গে সংলাপ করার প্রয়োজন মনে করেন প্রশ্ন ছিল এস এম কামালের কাছে।
জবাবে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিচল, মুক্তিযুদ্ধের ধারক-বাহক, সেই পথেই আছে। কখনো লক্ষ্য থেকে বিচ্যুতি হয়নি। নির্বাচন বাংলাদেশ ও বাঙালির ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। সেটা রক্ষা করার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলের।’

‘দায়িত্বশীল দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় চায় গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা, জনগণ উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোটদানে অংশগ্রহণ করুক। অর্থাৎ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। সে নির্বাচনে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে জনমত প্রতিফলিত হোক। এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের একমাত্র কথা। তবে কারো সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবে ইসি।’

(ঢাকাটাইমস/২৮সেপ্টেম্বর/ডিএম)