ফরিদপুর-২ উপনির্বাচন: আ.লীগের মনোনয়ন পেতে সাজেদা চৌধুরীর ছেলেসহ অনেকের দৌড়ঝাঁপ

প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:৩৮ | আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬:২০

নুরুল ইসলাম, সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর)

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা-কৃষ্ণপুর) আসনের উপনির্বাচন । ইতোমধ্যে ২৬ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়নের আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন।

এদিকে আসনটিতে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি, তা নিয়ে সালথা ও নগরকান্দা উপজেলায় চলছে আলোচনা। তবে আওয়ামী লীগের দলীয় টিকিট (মনোনয়ন) পেতে চান আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের একাধিক নেতা। সাজেদা চৌধুরীর উত্তরসূরি হিসেবে তার ছেলে কৃষি গবেষক আকবর লাবু চৌধুরী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে সক্রিয় রয়েছেন। তিনি গত প্রায় চার বছর ধরে এ আসনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন। এখানকার আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতারা চাচ্ছেন সাজেদা চৌধুরীর শূন্যস্থান ধরে রাখুক তার পরিবার। ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও সাজেদার ছেলে শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর জন্য দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে সাজেদা চৌধুরী ছেলের বাইরেও দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে রয়েছেন কয়েকজন নেতা।

তারা হলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্য ও নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া, ফরিদপুর জেলা শ্রমিকলীগের সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক এমপি সাইফুর রহমান জুয়েল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) আ ত ম হালিম ও সাব্বির হোসেন, জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক আব্দুস সোবহান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নগরকান্দার চরযশোহরদী গ্রামের আবু ইউসুফ।

সাজেদা চৌধুরী জীবিত থাকতেই এসব নেতারা নিজেদের এমপি প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচার-প্রচারণা চালান। যে কারণে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি। দলীয় নানা কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় পৃথকভাবে। তবে উভয় উপজেলা আওয়ামী লীগ সহযোগী সংগঠনের সিংহভাগ নেতারা সাজেদা চৌধুরীর পরিবারের সাথে মিলে রাজনীতি করছেন। সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুর পর আরও সক্রিয় হয়ে উঠে ওইসব এমপি প্রার্থীরা। এখন উপনির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তারা। দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রে করছেন লবিং। ভোট আর সমর্থন পেতে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আগে থেকেই এলাকায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও মতবিনিময় সভা করছেন।

সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া ও নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. বেলায়েত হোসেন মিয়া বলেন, আমাদের নেত্রী সাজেদা চৌধুরীর অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তার ছেলে শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী আমাদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। নেত্রী মারা যাওয়ার পর এখনও তিনি আমাদের নেতা। সাজেদা চৌধুরীর পরিবারের বাইরে আমরা যাবো না। আমরা আশা করছি সাজেদা চৌধুরীর শূন্য স্থান পূরণ করবেন তার ছেলে শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী। সালথা ও নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সাজেদা চৌধুরীর ছেলে শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর জন্য দলীয় মনোনয়ন চাই।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শামিম হক এক অনুষ্ঠানে বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে সাজেদা চৌধুরীর ছেলে শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর জন্য দলীয় মনোনয়ন চাইবো। আমরা আশা করছি তিনিই হবেন নৌকার মাঝি।

গত ১১ সেপ্টেম্বর এ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদ উপনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর ১৩ সেপ্টেম্বর আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৬ সেপ্টেম্বর অষ্টম কমিশন বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এ আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, মানোনয়নপত্র বাছাই ১২ অক্টোবর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ ১৯ অক্টোবর। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৫ নভেম্বর।

ঢাকাটাইমস/২৮সেপ্টেম্বর/এআর)