নামেই দাঁড়িয়ে আছে ফেনীর শর্শদী রেল স্টেশন

প্রকাশ | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:০৭ | আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:৪৫

আরিফ আজম, ফেনী

ফেনী সদর উপজেলার শর্শদীতে জনবল সংকটের কারণে রেল স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যাতায়াত না থাকায় ময়লা-আবর্জনায় ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ফলে আশপাশের জায়গাগুলো দিনদিন বেদখলের পাশাপাশি অপরাধীদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, এ স্টেশনকে ঘিরে রেলের তেল চোর চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বহু বছরের পুরোনো শর্শদী স্টেশনটি আধুনিকায়ন হলেও জনশূন্য। চারদিকে সুনসান নীরবতা। সেখানে একটি ভবন নির্মাণের পাশাপাশি রেললাইন পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ভবনের ভেতরের কক্ষগুলো নোংরা-আবর্জনায় ভরা। এলোমেলো পড়ে আছে চেয়ার-টেবিল। স্টেশন মাস্টার ও টিকিট কাউন্টার কক্ষটি ধুলাবালিতে স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়ে আছে। সবকটি কক্ষে ঝুলছে তালা। ফুটওভার ব্রিজের দুই পাশে ওঠানামার জায়গায় ঝোপঝাড়ে ভরে আছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন এখানে কোনো কর্মকর্তা না আসায় পাশের ডোবা দখল করে ঘের তৈরি করে মাছ চাষ হচ্ছে। স্টেশনের আশপাশে মাছা তৈরি করে শাকসবজির চাষ হচ্ছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, শর্শদী স্টেশনে এক সময় ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম রুটের নাসিরাবাদ, সিলেট রুটের জালালাবাদ ও লাকসাম-চট্টগ্রাম রুটের ডেমো ট্রেনে যাত্রী উঠানামা করতো। ডেমো ও জালালাবাদ বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ থাকা এ স্টেশনে এখন শুধু দুই একটি ট্রেন থামে। এতে যাত্রীরা নামার সুবিধা পেলেও টিকিট বিক্রি না হওয়ায় ট্রেনে উঠতে পারে না।

সূত্র আরও জানায়, এখানে তিনজন স্টেশন মাস্টার ও দুইজন কর্মচারীর পদ রয়েছে কাগজে কলমে। এখানকার স্টেশন মাষ্টার আনোয়ারুল কবির সিকদার ২০১৮ সাল থেকে কুমিল্লা স্টেশনে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। স্টেশন মাস্টার ইমাম উদ্দিন সেন্টু গত দুই মাস আগে ফেনী স্টেশনে বদলি হয়ে যান। স্টেশন মাস্টারের আরেকটি পদ দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে। কর্মচারী জামাল উদ্দিন অবসরে যাওয়ার পর থেকে পদটি শূন্য। আরেক কর্মচারী খাদেম আলী হাসানপুরে বদলি হয়ে যায়।

শর্শদী রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার আনোয়ারুল কবির সিকদার ঢাকাটাইমসকে বলেন, মাঝেমধ্যে তিনি স্টেশনটি দেখতে আসেন। স্টেশনটি চালুর ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন মহল চিন্তাভাবনা করছেন। জনবল নিয়োগ হলে স্টেশনটি পুরোদমে চালু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঞা ঢাকাটাইমসকে বলেন, শর্শদী রেল স্টেশন এক সময় খুবই জমজমাট ছিল। এখানে টিকিট বিক্রি না হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ রেলের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শর্শদী স্টেশনটি চালু হলে একদিকে যেমন পুরোনো ঐতিহ্য ফিরে পাবে, অন্যদিকে এলাকাটি আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে।

(ঢাকাটাইমস/২৯সেপ্টেম্বর/এসএ)