লক্ষ্মীপুরে তিন বছর পর গৃহকর্মীর লাশ কবর থেকে উত্তোলন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮:৩৪

তিন বছর পর আদালতের নির্দেশে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী এলাকা থেকে রিয়া আক্তার (১৩) বছরের গৃহকর্মীর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌস আরা উপস্থিত থেকে কবর থেকে ওই কর্মীর লাশ উত্তোলন করেন।

এর আগে চলতি বছরের ১ মে গোয়েন্দা পুলিশকে গৃহকর্মীর মৃত্যুর কারণ, ডিএনএ টেস্ট করার জন্য লাশ কবর থেকে উত্তোলন করার নির্দেশ দেন করেন ঢাকার সিএমএম আদালত। এসময় গৃহকর্মী রিয়া আক্তারের মা কুলসুমসহ পরিবারের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন।

নিহতের মা কুলসুম জানান, ঢাকার ধানমন্ডিতে মমিনুলের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করত রিয়া। ২০১৯ সালের ১৬ আগস্ট রিয়া আক্তারকে ধর্ষণ করে ১০ তলা ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করেন নিহতের মা কুলসুম বেগম। এ ঘটনায় পুলিশ তাড়াহুড়া করে রিয়া আক্তার (আমার মেয়ের) লাশ নিজ বাড়ি জামালপুরে না পাঠিয়ে তার নানার বাড়ি লক্ষ্মীপুরে মাইক্রোবাসে করে পাঠিয়ে দেয়। পরে ধানমন্ডি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও পুলিশ টাকার বিনিময়ে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি করেন।

তিনি বলেন, যেন তার মতো আর কোন মায়ের বুক এইভাবে খালি না হয়, সেটাই প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুতি নিহত গৃহকর্মীর মায়ের।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌস আরা বলেন, আদালতের নির্দেশে প্রায় তিন বছর পর গৃহকর্মীর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সঠিক তদন্তে বেরিয়ে আসবে মৃত্যুর রহস্য। এর বাইরে আর কিছুই বলার নেই।

উল্লেখ্য, রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় মমিনুলের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত রিয়া আক্তার। গত ২০১৯সালের ১৬ আগস্ট ভোরে রিয়া আক্তার (১৩) নামে এক গৃহকর্মীকে ধর্ষণ করে বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় পুলিশ ধানমন্ডি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে। পরে পুলিশ ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছে বলে প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আদালতে ওই প্রতিবেদন নারাজি দেন গৃহকর্মীর মা কুলসুম। এ ঘটনায় বাড়ির মালিক মমিনুল হকসহ নয়জনকে আসামি করে সিএমএ আদালতে একটি মামলা করেন। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। পরে ওই মামলা তদন্ত করে আসামিরা জড়িত নয় বলে প্রতিবেদন দেন সিআইডি। পরে ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে একটি পিটিশন মামলা করলে আবার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।

পরে পিবিআই আসামিরা জড়িত নয় বলে আবার প্রতিবেদন দেন। মামলার নিয়মিত চলমান প্রক্রিয়ায় ও প্রতিবেদন উপযুক্ত মনে না করায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালত মামলাটি চলতি বছরের ১ মে গোয়েন্দা পুলিশকে গৃহকর্মীর মৃত্যুর কারণ, ডিএনএ টেস্ট করার জন্য লাশ কবর থেকে উত্তোলন করার নির্দেশ দেয় ঢাকার সিএমএম আদালত।

আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার কবর থেকে গৃহকর্মীর লাশ উত্তোলন করা হলো।

নিহত গৃহকর্মীর বাড়ি জামালপুর জেলার বকসীগঞ্জের গোয়াল গাঁ এলাকায়। গৃহকর্মী রিয়া আক্তারকে তখন তাড়াহুড়ো করে নিজ গ্রামে দাফন না করে নানাবাড়ি লক্ষ্মীপুরে দাফন করে।

(ঢাকাটাইমস/২৯সেপ্টেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :