নতুন আইজিপিকে নিয়ে জানুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২:৫৮

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। আইজিপি হিসেবে যোগদানের আগে তিনি র‌্যাব ফোর্সেসের মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর ৮ম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে পুলিশে যোগ দেন।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন একজন চৌকস, পেশাদার ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পুলিশ অফিসার হিসেবে সমাদৃত। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি অত্যন্ত সততা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট বিশেষ করে পুলিশ সদরদপ্তরে, সিআইডি, ঢাকা ও ময়মনসিংহ রেঞ্জ এবং সর্বশেষ র‌্যাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তার দীর্ঘ গৌরবময় চাকুরিকালে তিনি ডিএমপিতে সহকারী কমিশনার, এপিবিএনে সহকারী পুলিশ সুপার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিরাজগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলায় সার্কেল এএসপি, চাঁদপুর জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং ডিএমপিতে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নীলফামারী জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন। তিনি ডিএমপিতে উপপুলিশ কমিশনার, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে এআইজি (সংস্থাপন) ও এআইজি (গোপনীয়) এবং ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ছিলেন।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশনস) ও ডিআইজি (প্রশাসন) হিসেবে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নবগঠিত ময়মনসিংহ রেঞ্জের প্রথম ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালনের গৌরবের অধিকারী। তার হাত ধরেই ময়মনসিংহ রেঞ্জের প্রশাসনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা পায়। এরপর তিনি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি লাভের পর তিনি পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) পদ অলংকৃত করেন।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন পুলিশের সবচেয়ে পুরনো ও বিশেষায়িত ইউনিট সিআইডি প্রধান (অতিরিক্ত আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সিআইডিতে কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবের পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়ের ল্যাবের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। ফলে মামলার আলামতের ফরেনসিক পরীক্ষা ও এক্সপার্ট ওপিনিয়ন প্রদান প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। এছাড়া মামলা তদন্তে পুলিশ সদস্যদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তদন্তের মান বাড়াতে তিনি প্রশিক্ষণের ওপরও জোর দেন। এতে সিআইডির মামলা তদন্তে গুণগত পরিবর্তন সাধিত হয় এবং মামলা নিষ্পত্তির হারও বৃদ্ধি পায়।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল পুলিশের এ্যালিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। করোনা মহামারীর ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার নেতৃত্বে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে র্যা বের অনবদ্য ভূমিকা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

করোনাকালে র‌্যাব সদস্যদের নিয়মিত অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখা ছিল তাঁর জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু পেশাদার কর্মকর্তা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের কৌশলী কর্মপরিকল্পনা এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বে র‌্যাব আভিযানিক সফলতার ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরই পূর্বের বছরকে ছাড়িয়ে যায়।

র‌্যাব মহাপরিচালক হিসেবে সহিংস উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে তাঁর উদ্যোগে অপারেশনাল কার্যক্রমের পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক পোস্টার, ব্যানার ও ডিজিটাল বিলবোর্ডে জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচারণার পাশাপাশি টেলিভিশনে জঙ্গিবাদ বিরোধী টিভিসি প্রচারের মত ইনোভেটিভ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। তাঁর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ধর্মীয় চরমপন্থায় দীক্ষিত কিন্তু অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত হয়নি এমন ব্যক্তিদেরকে পুনর্বাসন এবং সমাজের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে 'নব দিগন্তের পথে' কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

তাছাড়া, তাঁর সময়কালে র‌্যাব বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গিবিরোধী অভিযান সফলভাবে পরিচালনা করে। র‌্যাব কর্তৃক মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার ও মাদকের বিস্তার রোধে র‌্যাবে তার নির্দেশনা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।

সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করার ক্ষেত্রে র‌্যাব সদস্যদের দুঃসাহসিক অপারেশনের ওপর ভিত্তি করে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ চলচ্চিত্র নির্মাণে তার অনন্য সাধারণ ভূমিকা রয়েছে। পুলিশে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দুইবার তিনি বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)-এ ভূষিত হয়েছেন।

নতুন এই আইজিপি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক সভা-সেমিনার ও প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। দেশের সীমানা ছাপিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, লাইবেরিয়া এবং দারফুরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে দেশের জন্য সম্মান ও গৌরব বয়ে আনেন।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ১৯৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার শ্রীহাইল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে স্মাতক সম্মান ও স্মাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত এবং তাঁর চিকিৎসক স্ত্রী সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।

(ঢাকাটাইমস/৩০সেপ্টম্বর/এএইচ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

জিম্মি নাবিকদের মুক্তির আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডিএনসিসি কার্যালয় সরানোর মধ্য দিয়ে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু 

বিএসএমএমইউ উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন দীন মোহাম্মদ, বললেন ‘কোনো অন্যায় আবদার শুনব না’

সাত বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে

বাংলাদেশে মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত থাকবে: যুক্তরাষ্ট্র

সীমান্তে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ ফেরত দিলো বিএসএফ

ট্রেনে ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

৫০ হাজার টন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :