ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ সীমানা প্রাচীর নির্মাণে বাধা

প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০২২, ২০:১৩

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজে শহর শাখার সীমানা প্রাচীরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসন বলছে, ওই জায়গা নিয়ে মালিকানা সত্ত্বের আদালতে মামলা রয়েছে- এখন নিষ্পত্তি হয়নি ওই জায়গার মালিক কে।

শনিবার সকাল থেকে ওই মাঠের সীমানার কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ কাজটি বাস্তবায়ন করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।

কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার থেকে এ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সীমানা প্রাচীরের সাথে একটি বড় ফটক ও দুই পাশে দুটি ছোট ফটক করার কথা ছিল। কিন্তু শনিবার সকাল ১০টার দিক থেকে ওই কাজ বন্ধ করে দেয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।

ফরিদপুরের পরিবেশবাদী কাজী শামসুজ্জামান লিটন জানান, রাজেন্দ্র কলেজের শহর ক্যাম্পাসের পাশে যে মাঠটি রয়েছে- সেখানে শহরের মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করে এবং সকাল বেলায় মুক্ত জায়গায় ব্যায়াম করে- এটি বাধাগস্ত হবে।

একই কথা বলেছেন কলেজ শিক্ষক প্রফেসর আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ওই জায়গাটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকা দরকার কারণ শহরে বিনোদনের কোন জায়গা নেই। পরিবারের সন্তানদের নিয়ে বসার মত কোন ভালো পরিবেশ নেই ওই জায়গাটুকু সবাই আসে, যদি প্রাচীন দেয়া হয়- তাহলে সেটি বাধাগ্রস্ত হবে।

ফরিদপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান বলেন, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শহর শাখার সামনে ফরিদ শাহ সড়ক সংলগ্ন একটি সীমানা প্রাচীর আগে ছিল। ওই জায়গাতেই নতুন আরেকটি সীমানা প্রাচীর অনুমোদন হয়ে আসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে। সে প্রাচীরের নির্মাণ কাজ শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার থেকে।

শনিবার শ্রমিকরা কাজ করতে গেলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে জানায়, ওই জায়গা নিয়ে বিরোধ আছে- এ জন্য কাজ বন্ধ রাখতে হবে।

নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান বলেন, যে জায়গায় আগে থেকে সীমানা প্রাচীর ছিল এবং যার পাশে ফরিদপুর পৌরসভার সড়ক সে জায়গা নিয়ে প্রশাসনের সাথে কি বিরোধ থাকতে পারে তা আমার বোধগম্য নয়।

এ কাজটি বাস্তবায়ন করছেন ঠিকাদার মোহাম্মদ মিঠু। তিনি জানান, নয়জন শ্রমিক এ কাজটি করছিলেন। বর্তমানে গর্ত খোড়ার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ২৭টি গর্ত খোড়া হয়েছে। তিনি বলেন, শনিবার সকাল ৮টা থেকে শ্রমিকরা কাজা শুরু করে। কিন্তু সকাল ১০টার দিকে কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছে।

এদিকে নির্মাণসামগ্রীর দামও চড়া। আমাকে ক্ষতির ঝুঁকিতে পড়তে হয়েছে।

সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ অসীম কুমার সাহা বলেন, কাজ শুরু করেছিল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। কাজ বন্ধ করেছে তারাই। শিক্ষা প্রকৌশল অধিপ্তর এর নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে মৌখিকভাবে কাজ বন্ধ করতে হচ্ছে বলে জানান।

প্রশাসন কেন বাধা দিচ্ছে জানতে চাইলে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ সংলগ্ন মাঠটি জেলা প্রশাসনের সম্পত্তি। আরএস ও এসএ অনুযায়ী ওটি জেলা প্রশাসনের। কিন্তু বিএস রেকর্ডে এটি শিক্ষা বিভাগের নামে রেকর্ড হয়। এ রেকর্ড সংশোধনের জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলার প্রথম জজ আদালতে ২৮/২০২১ মামলা চলমান। ওই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সীমানা প্রাচীর করা দৃষ্টিকটু, বিধায় সেটি করতে বাধা দেওয়া হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/০১অক্টোবর/এলএ)