বাবুলের বিরুদ্ধে বনজ কুমারের মামলা কতদূর এগোলো? কী বলছে পুলিশ
বিদেশে অবস্থানরত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন ও সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিভিন্ন ধারায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছেন পরিদর্শক রবিউল ইসলাম।
মামলায় অন্য দুই আসামি হলেন- বাবুল আক্তারের ভাই হাবিবুর রহমান লাবু ও বাবা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া।
রবিবার সংশ্লিষ্ট থানা সূত্রে জানা গেছে, পিবিআই প্রধানের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে তা সম্পূর্ণ ডিজিটাল মাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মামলার আলামত হিসেবে যেসব কনটেন্ট পাওয়া গেছে তা সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে রিপোর্ট পাওয়া গেলে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে। এরই মধ্যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে।
এদিকে মামলার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন বাবুলের ভাই হাবিবুর রহমান ও তার বাবা আব্দুল ওয়াদুদ। তাদেরকে আটকে সোর্স লাগিয়েছে পুলিশ, তবে এখন পর্যন্ত তাদের কোনো হদিস মেলেনি। তাছাড়া অভিযুক্তরা আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন, এমন কোনো কাগজও থানায় আসেনি। মামলার বাকি দুই আসামির মধ্যে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন দেশের বাইরে এবং সাবেক এসপি বাবুল আক্তার স্ত্রী মিতু হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রচার হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে পিবিআই প্রধানকে অভিযুক্ত করে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়। সেই তথ্য প্রচার করেন প্রবাসী ইলিয়াস হোসেন, বাবুল আক্তার ও তার ভাই হাবিবুর রহমান লাবুসহ চারজন। পিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই ভিডিওসহ সব কিছুই ভুয়া ও বানোয়াট। তাই আইনি প্রতিকার পেতেই এ মামলা করা হয়েছে।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। ঘটনার সময় এসপি বাবুল আক্তার ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। চট্টগ্রামে ফিরে তিনি পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলায় মিতু হত্যাকাণ্ডে তারই সংশ্লিষ্টতা পায় পিবিআই।
এরপর গত বছরের ১২ মে আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন বাবুলকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা। ওই দিনই মামলাটিতে বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে আছেন বাবুল।
এদিকে ইলিয়াসের ভিডিও প্রকাশের পরই বনজ কুমারসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন বাবুল আক্তার। তবে সে আবেদন খারিজ করে দেন আদালত। অভিযোগে বলা হয়, পিবিআই অফিসে ৫৩ ঘণ্টা বাবুলকে আটকে রেখে নির্যাতন ও জোর করে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
পিবিআই প্রধানের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক রবিউল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ইলেক্ট্রনিকস ডিভাইসের মাধ্যমে আসামিরা বিভিন্ন কথাবার্তা বলেছে। মামলার তদন্ত চলছে, একটু সময় লাগবে। অভিযোগ প্রমাণে যে ধরনের কার্যক্রম প্রয়োজন সেগুলো চলছে।’
মামলায় বেশ অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঢাকাটাইমস/০৩অক্টোবর/এসএস/এফএ