মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আরও ২ পুলিশ কর্মকর্তার সাক্ষ্য প্রদান

প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০২২, ১৬:২৯ | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২২, ১৬:৩১

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তা।

সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এই সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। 

এদিন চারজনের সাক্ষ্য প্রদানের কথা থাকলেও দুজন আদালতে হাজির  হয়ে সাক্ষ্য দেন।

আদালতে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) বোরহমান দর্জি ও উপ-পরিদর্শক(এসআই) ওবায়েদ হোসেন। এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর সোনারগা থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক তবিদুর রহমান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম সাক্ষ্য প্রদান করেন। 

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে মামুনুল হককে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে সকাল ৯টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়।

নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, সোনারগাঁ থানায় জান্নাত আরা ঝর্ণার দায়ের করা ধর্ষণ মামলার শুনানিতে 

চারজনের মধ্যে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। এই নিয়ে মোট মামলার বাদীসহ ১৫ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করলেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মামুনুল হককে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রকিব উদ্দিন জানান, সাক্ষীরা আদালতে তাদের সাক্ষ্যে বলেছেন, তারা দায়িত্বরত অবস্থায় সোনারগাঁ থানার ডিউটি অফিসারের কাছ থেকে খবর পেয়ে রয়েল রিসোর্টে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তারা মামুনুল হককে ও জান্নাত আরা ঝর্নাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক এলোমেলো জবাব দেন। জান্নাত আরা ঝর্ণাকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছে মামুনুল হক তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রয়েল রিসোর্টে এনে ধর্ষণ করেছে। আদালত তাদের সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। 

মামুনুল হকের আইনজীবী ওমর ফারুক জানান, আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যের সঙ্গে মামলার এজাহারের সঙ্গে কোন মিল পাওয়া যায়নি। অনেক অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। সাক্ষীদের জেরায় তারা অনেক প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি। আইনজীবী ওমর ফারুক বলেন, আজকে বিয়ে ছাড়াই সন্তান হয়ে যাচ্ছে, বিয়ের কাবিননামা খোঁজে না। অথচ মামুনুল হককে  একটি সাজানো মামলায় বিচার করা হচ্ছে। 

২০২১ সালের ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে নারীসহ স্থানীয়দের হাতে অবরুদ্ধ হন মামুনুল হক। সে সময় তিনি বিব্রতকর অবস্থায় পড়লে হেফাজতের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যান। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর চালানো হয়। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ঘটনার ২৭ দিন পর ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে তাঁর কথিত স্ত্রী বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। একই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের নামে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

(ঢাকাটাইমস/৩অক্টোবর/এআর)