পরীক্ষার ফলাফল পরিবর্তনসহ ভর্তি, সব করত চক্রটি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গ্রুপ ও পেইজে খুলে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, বিবিএ ও এমবিএ সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা বলে লোভনীয় পোস্ট দিতো চক্রটি। এছাড়া পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার কথাও বলা হতো ফেসবুকের ওই সব পোস্টে।
উপকমিশনার এ.এফ.এম আল কিবরিয়া বলেন, প্রতারক এই চক্রটি এক থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি ও সংশোধনের কাজ করে দিবে বলেও ভুক্তভোগীকে বলতো। ভুয়া সার্টিফিকেট এবং এনআইডি কার্ড তৈরির টাকা হাতিয়ে নিয়ে ভুক্তভোগীদের ব্লক করে দিতো।
চলতি বছরের গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনা থেকে নাঈম চৌধুরী ও আয়ান খান শান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় আত্মগোপনে চলে যায় ওই চক্রের ফয়সাল আহমেদ। তাকে গতকাল রবিবার রাতে ঢাকা জেলার আশুলিয়া ডেন্ডাবর পল্লী বিদ্যুৎ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ই-ফ্রড টিম।
সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপকমিশনার এ.এফ.এম আল কিবরিয়া ঢাকাটাইমসকে এতথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃত ফয়সাল আহমেদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন, ৪টি সিম কার্ড ও ৬টি ফেসবুক আইডি ও শতাধিক ফেসবুক গ্রুপ উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ই-ফ্রড টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) সুরঞ্জনা সাহা জানান, নিয়মিত অনলাইন মনিটরিং করার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপ ও পেইজ নজরে আসে।
পরে দেখা যায়, ওই সব পেইজে একাডেমিক সার্টিফিকেট ও বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার রেজাল্ট পরিবর্তন, ফেল করা পরীক্ষার্থীকে পাশ করিয়ে দেয়া, পলিটেকনিক্যাল কলেজের টিসি প্রদান, পছন্দ মতো পলিটেকনিক্যাল কলেজে ভর্তি, সরকারী পলিটেকনিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ না হলে সরাসরি ভর্তির ব্যবস্থা করবে বলে লোভনীয় সব পোস্ট দেওয়া। এবং নিচে লেখা আগ্রহীদের ইনবক্সে যোগাযোগ করুন।
তিনি বলেন, প্রতারক এই চক্রটি এক থেকে তিন ঘন্টার মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মসনদ তৈরি, সংশোধনের কাজ করে দিবে বলেও পোস্ট প্রদান করে থাকে। আগ্রহীরা প্রতারক চক্রের ফেসবুকের ইনবক্সে এবং হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে তারা অগ্রিম টাকা নিয়ে সেবা প্রত্যাশীদের ব্লক করে দিত।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ওই ঘটনায় রাজধানীর রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়। এই মামলায় ইতিমধ্যে নাঈম চৌধুরী ও আয়ান খান শান্ত নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ফায়সালের নাম পাওয়া যায়। এছাড়া প্রতারক চক্রের অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
রাজধানীর রমনা মডেল থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ ফয়সাল আহমেদকে আদালতে তোলা হয়। পরে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
(ঢাকাটাইমস/০৩অক্টোবর/এএইচ)