মৌলভীবাজারে চোখ ওঠা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে ঘরে ঘরে, আক্রান্ত কয়েক হাজার, ওষুধ ও ড্রপের সংকট

প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০২২, ১১:৫৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে চোখের রোগ কনজাংটিভাইটিস। এটি একটি ভাইরাস জনিত চোখওঠা রোগ। প্রতিদিন এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। জেলার ৭ উপজেলার ইতোমধ্যে এই রোগে কয়েক হাজার লোক আক্রান্ত হয়েছে। চোখের চিকিৎসার অন্যতম প্রতিষ্ঠান  বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালসহ জেলা সদর  হাসপাতাল,বিভিন্ন  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক এমনকি  বেসরকারি হাসপাতাল ও প্রাইভেট ডাক্তারদের চেম্বারে চিকিৎসা নিতে দিন দিন আক্রান্তদের ভীড় বাড়ছে।পাশাপাশি অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় চোখের ড্র' পের সংকট দেখা দিয়েছে।
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতাল সুত্রে  জানা যায়,  প্রতিদিনই কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত রোগীরা  চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভীড় করছেন। গ্রামগঞ্জে  বাড়ছে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা।
চিকিৎসকরা বলছেন, এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কিছু নেই। এটি  ভাইরাসজনিত রোগ। কালো চশমা পরে ঘরে থাকলে  এক সপ্তাহের  মধ্যে  তা সেরে যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই রোগটিকে কনজাংটিভাইটিস বা চোখের আবরণ কনজাংটিভার প্রদাহ।
মৌলভীবাজার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল চিকিৎসকরা বলছেন,  কনজাংটিভাইটিসের লক্ষণ হলো চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে ব্যথা, খচখচ করা বা অস্বস্তি। প্রথমে এক চোখ আক্রান্ত হয়। পরে অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগে চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। চোখের নিচের অংশ ফুলে লাল হয়ে যায়। চোখ জ্বলে ও চুলকাতে থাকে। আলোয় চোখে অস্বস্তি বাড়ে।
তাদের পরামর্শ চোখ উঠলে রোগীর করোনার উপসর্গ রয়েছে কিনা, তা খেয়াল রাখতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনে করোনার পরীক্ষা করাতে হবে।
তারা জানান,  কনজাংটিভাইটিস রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে ছড়ায়। রোগীর ব্যবহৃত বস্তু রুমাল, তোয়ালে, বালিশ অন্যরা ব্যবহার করলে এতে আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া কনজাংটিভাইটিসের জন্য দায়ী ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়।
কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কাউকাপন গ্রামের কলেজ ছাত্র নিজাম উদ্দিন জানান,তাদের এলাকায় প্রতিটি ঘরে চোখ ওঠা রোগ। অসংখ্য লোক এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে। অনেক ফার্মেসিতে এখন মক্সিফ্লক্সাসিনসহ অনেক চোখের ড্রপ পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও কোথাও বেশী দামে এসব ড্রপ বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী মো. জালাল উদ্দিন মুর্শেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা একটি মৌসুমী ভাইরাসজনিত রোগ।গত মাস যাবত এর পাদুর্ভাব দেশা দিয়েছে।  আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসা ছাড়াই ৭ দিনে এই রোগ ভালো হয়। তবে চোখে জ্বালাযন্ত্রণা করলে চিকিসকের পরামর্শ নিয়ে ড্রপ ও ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। 
তিনি আরও বলেন, যেহেতু রোগটি ছোয়াচে তাই করোনায় যে রকম স্বাস্থ্যবিধি ঠিক অনেকটাই ওই রকমই মানতে হয়। তবে ড্রপার ব্যবহারের আগে এর মান ও মেয়াদ সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে যেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতেও এই রোগের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
 

(ঢাকাটাইমস/৪অক্টোবর/এআর)