সাফাই গাইতে গিয়ে এবার বেতন গচ্ছা দিতে হচ্ছে চসিকের ঝুলন দাশের

প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০২২, ১৭:৫২

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)-এর গেল ১৩তম সাধারণ সভায় প্রশ্ন ওঠে ৭৫ কিলোমিটার সড়কে এলইডি বাতি লাগানোর প্রকল্প নিয়ে। প্রকল্পে ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের গুরুতর অভিযোগ ওঠায় তদন্ত করে সিটি করপোরেশন। তিন মাস আগে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করা হয়। কিন্তু প্রতিবেদন জমার আড়াই মাস পর ঘুম ভাঙে চসিক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশের। চসিকের টাকায় পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ঠিকাদার সাফাই গান তিনি। আর এই সাফাই গাইতে ফাঁক-ফোকর রেখে চসিকের অনুমোদনও নিয়ে নেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সংস্থাটি।

একই সঙ্গে অননুমোদিতভাবে বিজ্ঞাপন দিয়ে সরকারি টাকার অপচয় করায় বেতন কাটা যাবে। তবে কত টাকা করে প্রতিমাসে বেতন কাটা যাবে তার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। দুয়েকদিনের ভেতরেই এ সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

চসিক সূত্রে জানা যায়, নগরের ৭৫ কিলোমিটার সড়কে এলইডি বাতি লাগানোর জন্য এইচটিএমএস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৪২ কোটি টাকার কার্যাদেশ দেয় চসিক।

প্রকল্পের ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি নিম্নমানের ব্যবহার করার অভিযোগ তদন্তে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলামকে আহ্বায়ক, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দীন জুয়েল এবং সিটি মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেমকে সদস্য করে কমিটি গঠন করা হয়। গত জুন মাসে সে কমিটি তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ জানিয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চসিকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঠিকাদারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আসায় উনি (ঝুলন কুমার দাশ) এতো তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল কেন? তাহলে তিনি নিশ্চয়ই ঠিকাদারের অংশ বা তিনিও ঠিকাদার। অথবা ঠিকাদারের সাথে তারও শেয়ার আছে। নাহলে তিনি কেন সিটি করপোরেশনের টাকা খরচ করে এতো বড় বিজ্ঞাপন দেব! এগুলো সরকারি টাকা না? বিজ্ঞাপন দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হলেও কি উনি দুই আড়াই লাখ টাকার বিজ্ঞাপন দিতে পারেন?’

এ প্রসঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের নিবার্হী কর্মকর্তা শহীদুল আলম বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশনের একটা তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে এতো বড় বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানোর তো কোনো বিষয় ছিল না। এটার জন্য যথাযথ অনুমোদনও নেওয়া হয়নি।’

টাকা কেটে রাখার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। মেয়র মহোদয় তো আজকেই এলেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ঠিক কি করা হবে। এই টাকাটা কীভাবে দেওয়া হবে। কালকে মেয়র মহোদয় এলে না হয় বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।’

(ঢাকাটাইমস/৪অক্টোবর/এআর)