বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে লোকসানের মুখে দেশ

প্রকাশ | ০৫ অক্টোবর ২০২২, ০৯:৪৩ | আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২২, ১৩:২৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দেশের গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ফলে ভোগান্তি এবং আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে দেশ। একদিকে রফতানিমুখী শিল্প লোকসানের মুখে পড়েছে। অন্যদিকে সাধারণ জনগণকে গুণতে হয়েছে অতিরিক্ত অর্থ।

শিল্পখাতে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুতের ব্যবহার হয় পোশাক শিল্পে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে এ শিল্পকে গুণতে হয়েছে অতিরিক্ত লোকসান। ঢাকার আশপাশের অঞ্চলে অবস্থিত শিল্প-কারখানাগুলো পড়েছে চাপের মুখে।

গাজীপুরে অবস্থিত ক্রসলাইন ফ্যাক্টরির জেনারেল ম্যানেজার রফিকুল আলম বলেন, ‘এত দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের প্রতি মূহূর্তে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। অর্ডার এখন কম থাকায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত আমাদের কারখানা চলে। কিন্তু দুপুর ২টা থেকে ৫টা র্পযন্ত আমাদের জেনারেটর চালিয়ে কারখানা সচল রাখতে হয়েছে। এতে খরচ বেড়েছে, পণ্যের মানও কমে গেছে। ঘণ্টাপ্রতি জেনারেটর চালালে খরচ আসে ২৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকার মতো। প্রোডাকশন একদিন পিছিয়ে গেলে আমাদের খরচ বেড়ে যায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা। আগ থেকে না জানিয়ে এভাবে বিদ্যুৎ বিভ্রাট করা কারখানাগুলোর জন্য চরম ক্ষতিকর।’

এ বিষয়ে বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিদ্যুতের সমস্যার কারণে আমাদের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। প্রতিটি কারখানায় জেনারেটর দিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। জেনারেটর দিয়ে কাজ চালাতে হলে পণ্যের কোয়ালিটি, উৎপাদন ও খরচ বেড়ে যায়। তবে দুপুর থেকে কারখানা বন্ধের ফলে এ পর্যন্ত কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। এ হিসাব দুয়েকদিন পর বলা যাবে।’

সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে ৩৯০ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তবে এ সময়ে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক রপ্তানি তুলনামূলক হ্রাস পেয়েছে। পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩১৬ কোটি ১৬ লাখ ডলারের, যা গত বছরের সেপ্টেম্বরে ছিল ৩৪১ কোটি ৮৮ লাখ ডলার।
পোশাক শিল্পের এ রকম পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়া বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। জরুরি কাজ চালিয়ে নিতে জেনারেটরের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এ কারণে ভিড় বেড়েছে তেলের পাম্পে। কনটেইনার হাতে ডিজেল কিনতে পাম্পে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন মানুষ।

মঙ্গলবার ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পাম্পে তেল নিতে আসা গ্রাহকদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। অনেকেই এসেছেন পাঁচ লিটার থেকে ২০ লিটারের ধারণক্ষমতার কনটেইনার নিয়ে। আবার কেউ কেউ এসেছেন মাঝারি ধরনের ব্যারেল নিয়েও।
পরীবাগের ফিলিং স্টেশনে তেল কিনতে আসা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘বিদ্যুৎ নেই। এখন জেনারেটরই ভরসা। বিদ্যুৎ গেলে কী হবে, অফিস বা বাসার জেনারেটর তো চালাতে হবে। এজন্য তেল কিনতে এসেছি।’

সার্বিক প্রসঙ্গে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, ‘নানা কারণে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হতে পারে। যেহেতু এটি একটি টেকনিক্যাল বিষয়। সরকারের উচিৎ ছিল এমন পরিস্থিতির জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা রাখা। যেন জরুরি মুহূর্তে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়।’

(ঢাকাটাইমস/০৫অক্টোবর/ওএফ/এমএম)