১২ বছরের স্কুলছাত্রীর কোর্ট ম্যারিজ, বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করল প্রশাসন

প্রকাশ | ০৫ অক্টোবর ২০২২, ২২:৫৫

সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

কিশোরীর বয়স ১২। বিয়ের বয়স হয়নি। এমন অবস্থায় ভালো পাত্র হাত ছাড়া করতে চায়নি পরিবার। তাই তারা বিয়ে ঠিকঠাক করে আইনগত বাধার বিষয়টি মাথায় রেখে কৌশলের আশ্রয় নেন। আনুষ্ঠানিক বিয়ের মাত্র তিন দিন আগে মেয়েকে কোর্ট ম্যারিজ করান। তারপর করেন বিয়ের আয়োজন।

তবে শেষমেশ খবর পেয়ে বিয়ে বাড়িতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও নগরকান্দা থানার এক এসআই যান। তখন কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে  কোর্ট ম্যারিজ করার কাগজ দেখানো হয়। তবে তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বুধবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে এ ঘটনাটি ঘটে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কাইচাল ইউনিয়নের বড় নাউডুবি গ্রামে।

জানা গেছে, বুধবার দুপুরে নাউডুবি গ্রামের মো. মুন্নু মাতুব্বরের বাড়িতে তার মেয়ে পুড়াদিয়া এস এ খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ট শ্রেণীর ছাত্রী বৃষ্টি আকতারের (১২) সাথে সালথার রামকান্তপুর গ্রামের ইউনুস মাতুব্বরের ছেলে মো. মেহেদী হাসানের (২২) বিয়ের আয়োজন করেন। বরযাত্রী খাওয়ানোর অনুষ্ঠান চলাকালে খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন ওই বাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেন।

ওই স্কুল ছাত্রীর বাবা মুন্নু মাতুব্বর বলেন, ছেলে-মেয়ের আগেই কোর্ট ম্যারেজ করে বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে।

নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম ইমাম রাজি বলেন, খবর পেয়ে বিয়ে বাড়িতে প্রশাসনের লোকজন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে পাঠানো হয়। তারা ঘটনাস্থলে গেলে কিশোরীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ২ অক্টোবর ফরিদপুর আদালত নোটারী পাবলিক কার্যালয় গিয়ে এফিডেভিট (কোর্ট ম্যারেজ) মাধ্যমে বর-কনের বিবাহ সম্পন্ন হয়। এই সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্রও দেখানো হয়। তবে কোর্ট ম্যারেজের আইনগত কোনো ভিত্তি না থাকায় তারা বিয়েটি বন্ধ করে দেন। তিনি বলেন, ওই কিশোরীর বয়স ১৮ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেওয়া হবে না মর্মে কিশোরীর বাবার কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।

ইউএনও এস এম ইমাম রাজি বলেন, এত কম বয়সে ছেলে-মেয়ের কোর্ট ম্যারেজ হয় কিভাবে এটা আমার বুঝে আসছে না। কোর্ট ম্যারেজ বলতে কিছু আছে তা আমার জানা নেই। 

ফরিদপুর জজ কোর্টের আইনজীবী জায়নাল আবেদীন বলেন, কোর্ট ম্যারেজ বিয়ের দশ পয়সার দামও নেই। আইনত এ জাতীয় বিয়ের কোনো নিয়ম নেই। এক শ্রেণির অসাধু আইনজীবী টাকার বিনিময়ে ভুয়া কোর্ট ম্যারিজ ও এফিডেভিট করে দেন। কোট ম্যারিজে টাকার কোন উল্লেখ থাকলেও তা উঠানোর আইগত কোন সুযোগ নেই।

(ঢাকাটাইমস/৫অক্টোবর/এআর)