যেসব কারণে ক্ষতিকর ডাবের পানি

প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০২২, ১১:৫৯

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

সুস্বাদু ডাবের পানি প্রাকৃতিকভাবে স্বাস্থ্য গুণে ভরপুর। ব্যায়াম কিংবা পরিশ্রমের পর এই পানীয়টি পান করলে শরীরের ইলেক্টোলাইটের ভারসাম্য ফিরে আসে। এতে থাকা পটাশিয়াম ও সোডিয়াম এই ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে থাকা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, কপার এবং অ্যামিনো এসিড শরীর সুস্থ রাখতে দারুণ কার্যকরী। যেকোনো খাবার নিয়মিত খাওয়ার আগে আপনার শরীরের অবস্থা বুঝতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন। তবে শুধু উপকারিতাই নয়, ডাবের পানির রয়েছে বেশ কিছু ক্ষতিকর দিক। জেনে নিন কাদের জন্য ডাবের পানি ক্ষতিকর হতে পারে-

 

রক্তের চিনির মাত্রা বৃদ্ধি করে

ডাবের পানির কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম থাকে কিন্তু তারপরও এটি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী পানীয় নয়। এই মিষ্টি স্বাদের পানীয়টি রক্তের চিনির মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। ১ কাপ নারিকেল পানিতে ৬.২৬ গ্রাম বা ১.৫ চামচ চিনি থাকে। ডাবের পানি চিনির পরিমাণ কম থাকলেও কার্বহাইড্রেট ও ক্যালরি অধিক মাত্রায় থাকার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। তাই ডাবের পানি প্রতিদিন খাওয়া উচিৎ নয়। ডায়বেটিস থাকলে ডাবের পানি এড়িয়ে যাওয়াই উচিত।

 

রক্তাচাপ বাড়িয়ে দেয়

ডাবের পানি-শুনতে অদ্ভুত লাগলেও ডাবের পানি প্রচুর পরিমাণে থাকা সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। তাই যাদের রক্তচাপ স্বাভাবিকভাবেই বেশি তাদের ডাবের পানি প্রতিদিন খাওয়া উচিত নয়। ডাবের পানিতে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ডায়াটারি ফাইবার ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

 

কিডনি রোগ হলে

কিডনি রোগ হলে ডাবের পানি পান করা সম্পূর্ণ নিষেধ৷ কারণ কিডনি অকার্যকর হলে শরীরের অতিরিক্ত পটাশিয়াম দেহ থেকে বের হয় না৷ ফলে ডাবের পানি পটাশিয়াম ও দেহের পটাশিয়াম একত্রে কিডনি ও হৃদপিণ্ড দুটোই অকার্যকর করে দেয়৷ এই অবস্থায় রোগীর মুত্যু অনিবার্য৷ তাই যাদের দেহে প্রচুর পটাশিয়াম আছে এবং বের হয় না তাদের ডাবের পানি পান করা ঠিক না৷ ডাবের পানি রোগীকে পান করানোর আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷

 

ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত নয়

যদিও ওজন কমানোর জন্যই অনেকে ডাবের পানি পান করেন কিন্তু অতিরিক্ত ওজনের বা স্থূলতার সমস্যায় আক্রান্তদের জন্য এটি উপযুক্ত পানীয় নয়।

 

ক্রীড়াবিদদের জন্য উপযুক্ত পানীয় নয়

ডাবের পানিতে সোডিয়ামের তুলনায় উচ্চমাত্রার পটাসিয়াম থাকে যা ক্রীড়াবিদদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পটাসিয়ামের উচ্চমাত্রা কখনো কখনো বিষাক্ত হতে পারে, যার কারণে পটাসিয়াম সম্পর্কিত সমস্যা – হাইপারকেলেমিয়া হয়। এর ফলে কিডনির সমস্যা তৈরি হয় এবং হৃদস্পন্দন অস্বাভাবিক হয়। তাই ক্রীড়াবিদেরা এই পানীয় পান না করাই ভালো।

 

ল্যাক্সেটিভ প্রভাব

ডাবের পানি প্রাকৃতিক ল্যাক্সেটিভ বা রেচক হিসেবে কাজ করে। যাদের অন্ত্রের কাজ বা বাউয়েল মুভমেন্ট ঠিকভাবে হয় না তাদের জন্য এটি উপযুক্ত পানীয় নয়।

 

অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া

অনেকেরই ডাবের পানির প্রতি অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হয়। তারা যদি ডাবের পানি পান করেন তাহলে তাদের শরীরে র‍্যাশ হয়, চোখে পানি আসে, হাঁচি আসে বা ত্বক লাল হয়ে যায়। ২০০৬ সালে ইউ এস ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন নারিকেলকে ট্রি নাট হিসেবে শ্রেণী বিন্যস্ত করে। তাই যাদের ট্রি নাট অ্যালার্জি আছে তাদের ডাবের পানি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।

 

শরীর থেকে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান কমে যায়

অতিরিক্ত ডাবের পানি পান করার ফলে শরীর থেকে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান বের হয়ে যায় প্রস্রাবের মাধ্যমে। এর ফলে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয় যা কিডনির ক্ষতির কারণ হতে পারে।

 

তাজা ডাবের পানি পান করা উচিৎ

ডাব কাটার পর সাথে সাথেই ডাবের পানি পান করা উচিৎ। দীর্ঘ সময় ডাবের পানি রেখে দেয়া হলে এর পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যায় বলে এটি আর স্বাস্থ্যকর পানীয় থাকেনা।

(ঢাকাটাইমস/০৬ অক্টোবর/আরজেড)