রাবি শিক্ষক তাহের হত্যা: দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় স্থগিত

প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০২২, ১৫:১৬ | আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২২, ১৬:০৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবির) ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তারা হলেন—একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম।

তাদের মৃত্যুদণ্ড বহালের কার্যকারিতা ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। এ সময়ের মধ্যে তাদের মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করা যাবে না বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায়ের বিষয়ে করা পুনর্বিবেচনার আবেদনের (রিভিউ) শুনানির জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। 

গত মঙ্গলবার  আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিনের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার তাদের মৃত্যুদন্ডের আদেশ স্থগিতের আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন আইনজীবীরা।

এর আগে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৬ বিচারপতির স্বাক্ষরের পর গত ১৪ সেপ্টেম্বর ৬৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে।

আপিল বিভাগ রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ড. তাহের বেঁচে থাকলে অধ্যাপক হতে পারবেন না, এমন আশঙ্কা থেকে খুন করেন মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।

এর আগে চলতি বছরের ৫ এপ্রিল অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।

ওইদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (বর্তমানে বিচারপতি) বিশ্বজিৎ দেবনাথ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অবন্তী নূরুল ও মোহাম্মদ সাইফুল আলম। আসামিপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিকী।

রায় ঘোষণার সময় ড. তাহেরের স্ত্রী সুলতানা আহমেদ, ছেলে সানজিদ আলভী আহমেদ, মেয়ে অ্যাডভোকেট সেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ, তাদের পরিবারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি ও শাকিলা রওশন উপস্থিত ছিলেন।

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় নৃশংসভাবে হত্যার শিকার অধ্যাপক ড. তাহেরের মৃতদেহ। এর দুই দিন পর ওই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুতবিচার আদালত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও দুজনকে বেকসুর খালাস দেন। আসামিরা এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।

২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল হাইকোর্ট দুই আসামির ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখেন এবং অন্য দুই আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। ওই দুই আসামি নাজমুল আলম ও তার সম্বন্ধী আব্দুস সালামের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রেখেছেন আপিল আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধেও আসামিরা আপিল করেন। পরে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন।

(ঢাকাটাইমস/০৬অক্টোবর/এএ/কেএম)