সরকার গণতন্ত্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে: নোমান

প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০২২, ১৭:৪৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, সরকার জোরপূর্বক ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আছে। সেই জোরের সঙ্গে অপকর্ম করছে। যে গণতন্ত্রের জন্য আমরা লড়াই করেছিলাম তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বাসঘাতকতা করছে।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খা মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নোমান এসব কথা বলেন। ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘জিয়া প্রজন্মদল’ নামে একটি সংগঠন।

আব্দুল্লাহ আল নোমান ব‌লেন, এই বিশ্বাসঘাতক সরকারের হাতে জনগণকে আর থাকতে দেওয়া যায় না। জনগণ একটা পরিবর্তন চায় যে পরিবর্তন সরকারের পরিবর্তন, আশা আকাঙ্ক্ষার পরিবর্তন।

নোমান বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পরিণতি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। একটি গণতান্ত্রিক স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্রের একটা স্বাধীন পতাকার জন্য আমরা লড়াই করেছিলাম। সেই পতাকা শুধু বহন করে নিয়ে যাওয়ার জন্যই স্বাধীনতা নয় দেশের মানুষের মানুষের দরকার অর্থনৈতিক মুক্তি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকার অর্থনৈতিকভাবে দেশকে ধ্বংস করেছে। চুরি করেছে৷ ডাকাতি করেছে। এই সরকার আমাদের কোনো সহযোগিতা মানে নাই। গণলুটেরা অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই সরকার কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করেনি।

দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য বিরোধীদলের তিনটি কাজ থাকে উল্লেখ করে নোমান বলেন,  প্রথমত সরকারের ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দেওয়া, দ্বিতীয়ত এগুলো পত্র পত্রিকায় আলোচনা সমালোচনার মাধ্যমে তুলে ধরা আর সেভাবেও না হলে সর্বশেষ সেই ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াই ও তাদের ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য আন্দোলন। আমরা সর্বশেষ ধাপে এসে পৌছেছি এখন আমাদের আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।

নোমান বলেন, ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট পানি উত্তপ্ত হয়েছে, আরেকটু হলেই বাষ্প হয়ে যাবে।  তারেক রহমানের নীতিকে মেনে যদি আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাই তাহলে আমাদের লক্ষ অর্জন হবে। আমরা আমাদের চারজন সহকর্মীকে হারিয়েছি। রক্তাক্ত জাতীয় এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা বিভিন্ন দলের সাথে আলোচনা করছি।

তিনি আরো বলেন, এই সরকারের আমলে আমাদের অর্থনীতি, আইন, শাসনতন্ত্র মোতাবেক দেশ চলছে না। শাসনতন্ত্র ভেঙ্গে তারা শোষণ করছে। জনগণের আমানত সংবিধান। তাদেরকে লুকিয়েই তারা সংবিধানকে বদল করলো। গত কয়েক বছর ধরে বিরোধী দল হিসেবে আমরা আন্দোলন করে যাচ্ছি। কিন্তু আজ এমন একটা সময় জনগণের সম্পৃক্ততায় এই আন্দোলন এখন সরকার পতনের আন্দোলন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, গণতন্ত্রের বানী এখন উল্টো। যারা গণতন্ত্র চায় তাদের জীবনের কোন দাম নেই। আজকে দেশে বেচে থাকার কোন অধিকার নাই। বিনা ভোটের সরকার রাজত্ব করছে। গত দুটি নির্বাচনে মানুষ অংশগ্রহণ করতে পারেনি। আমাদের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বন্দি করা হয়েছিল। পুলিশ আর সিভিল প্রশাসনের বলে এই সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে। আগামী দিনের নির্বাচন নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ টিকতে পারবে না এটা তারা জানে।

জিয়া প্রজন্মদল কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আব্দুস সালাম বলেন, এমন কোন অপকর্ম নাই যেখানে পুলিশ, ছাত্রলীগ আর যুবলীগ জড়িত নয়। তাদের হাতে দেশের জণগণ সুরক্ষিত নয়। দেশের দূর্গতি শেষ হয়ে যাবে শেখ হাসিনার আমল শেষ হয়ে গেলে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মিথ্যা কথা বলে, আল্লাহ আর সহ্য করবে না।  বাচতে হলে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে।

আব্দুস সালাম আরও বলেন, অর্থনীতির বারোটা বাজায় দিছে। হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কথা বলে টাকা লুটপাট করছে এই সরকার।  দুর্ভিক্ষের গন্ধ পাচ্ছি বলেও ইলেকশনের জন্য ইসিকে ইভিএম কেনার জন্য কোটি কোটি টাকা দিচ্ছে। দেশের মানুষ এদিকে না খেয়ে আছে।

জিয়া প্রজন্মদলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শাহীনুর মল্লিক জীবনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন রুবেলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।

(ঢাকাটাইমস/০৬অক্টোবর/কেএম)