নোয়াল ফলের যত গুণ !

প্রকাশ | ০৭ অক্টোবর ২০২২, ১৬:১৩ | আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২২, ১৬:১৭

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

দেখতে আমলকীর মতো কিন্তু আকারে একটু ছোট। হলদে সবুজ রং। খেতে অন্যরকম নিজস্ব একটি স্বাদ। ফলটির গায়ে খাঁজকাটা থাকে ।দেখতে অনেকটা ছোট তারার মত।

এর আদি নিবাস কোথায় তা সঠিক জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হয় মাদাগাস্কারে এর উৎপত্তি। অনেক উদ্ভিদবিজ্ঞানী বলেন যে, এর আদি নিবাস দক্ষিণ এশিয়া। এ ফলটির রয়েছে অনেক ঔষধি গুণও।

নোয়াল ফল ঝাল-লবণ দিয়ে মাখিয়ে খেতে ভীষণ মজা লাগে। এছাড়া এটা দিয়ে আচার, জুস, জেলি, চাটনি ইত্যাদিও তৈরি করা হয়।

টক স্বাদের ফলের মধ্যে অন্যতম নোয়াল ফল প্রচুর ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ একটি ফল। এলাকা ভিত্তিতে এর বিভিন্ন নাম রয়েছে।

অঞ্চলভেদে নামকরণঃ একে নলতা, লেবরই, ফরফরি, নইল, নোয়াল, রয়েল, অরবরই ইত্যাদি নামে ডাকা হয়।

নোয়াল ফলের রস ভিনেগার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। টক স্বাদের পাকা নোয়াল ফলের এর ভর্তা খেতে ভীষণ মজা। নোয়াল ফল আমলকীর নিকট আত্নীয়।

পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতি  ১০০ গ্রাম নোয়াল ফলের রয়েছে- জলীয় অংশ ৯১.৯ গ্রাম, আমিষ ০.১৫৫ গ্রাম, চর্বি ০.৫২ গ্রাম, খাদ্যআঁশ ০.৮ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫.৪ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৭.৯ মিলিগ্রাম, আয়রন ৩.২৫ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ০.০১৯ মিলিগ্রাম, থায়ামিন ০.০২৫ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লেভিন ০.০১৩ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.২৯২ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন-সি ৪.৬ মিলিগ্রাম।

নোয়াল ফল গাছে গোলাপি রঙয়ের থোকা থোকা ফুল ফোটে মার্চ-এপ্রিল মাসে। আগস্টের শেষ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা হয়।

নোয়াল ফলের উপকারীতা

ওজন কমায়:

যাদের ওজন বেশি তারা নির্দ্বিধায় নোয়াল ফল খেতে পারেন। নোয়াল ফলে কোনো ক্যালোরি নেই। টক স্বাদের এই ফলটি ওজন কমাতে খুবই কার্যকর। যারা শরীরের অধিক ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা নোয়াল ফলটি খেয়ে দেখতে পারেন।

পেটের অসুখ সারায়:

নোয়াল ফলের ভেতরে গাঢ় সবুজ রংয়ের বীজ থাকে। পেটের অসুখ ও কৃমিনাশক হিসেবে এর বীজ ব্যবহার করা হয়।

মৌসুমি জ্বর প্রতিরোধে:

মৌসুমি জ্বর প্রতিরোধে ও মুখের রুচি ফিরিয়ে আনতে নোয়াল ফলটি সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই বিনা দ্বিধায় খেতে পারেন এই নোয়াল ফলটি।

ক্ষুধা বাড়ায়:

অনেকে টক ফল খেতে চাই না। ভিটামিন “সি” সমৃদ্ধ অনেক ফলই কিন্তু টক স্বাদের হয়ে থাকে। টক জাতীয় সকল ফল আমাদের খাবার তাড়াতাড়ি হজমে সহায়তা করে। নোয়াল ফল তেমনি খাবার হজমে সহায়তা করার পাশাপাশি রক্তের চর্বি কাটে। দ্রুত ক্ষুধা বাড়ায়।

ডায়াবেটিস রোগীর জন্য:

ডায়াবেটিস রোগীরা ফলটি সরাসরি বা জুস করে খেতে পারেন। ডায়বেটিস রোগীদের জন্য নোয়াল ফল খুবই উপকারী।

চুলের যত্নে:

নোয়াল ফলের রস চুলের গোড়ায় লাগালে চুল মজবুত হয় ও খুশকি দূর হয়।

নোয়াল ফলের পাতা:

নোয়াল ফলের গাছের কচিপাতা ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে শাক হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়। অকাল বার্ধক্য রোধে ও ত্বকের রোগ প্রতিরোধে নোয়াল ফলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

দিন দিন হারিয়ে যাওয়া দেশি ফলের চাহিদা বেড়েই চলেছে। কারণ মানুষ বুঝতে পেরেছে দেশি এসব ফল দামে যেমন কম আবার পুষ্টিগুণে ভরপুর।

(ঢাকাটাইমস/০৭অক্টোবর/আরকে)