গুজরাটে মুসলিমদের খুঁটিতে বেঁধে স্থানীয় পুলিশের নির্যাতন

প্রকাশ | ০৭ অক্টোবর ২০২২, ১৭:০৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

সম্প্রতি ভারতের গুজরাটে কয়েকজন মুসলিম সম্প্রদায়ের নাগরিকদের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে। এর পরই সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও। সংস্থাটির মতে এটি ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন’ এবং আইনের প্রতি সম্পূর্ণ অসম্মান।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিভি জানায়, ভিডিও মুসলিমদের যারা বেত্রাঘাত করেছে তারা সকলেই স্থানীয় পুলিশ।

এ ঘটনার সূত্রপাত মূলত গুজরাটের খেদা জেলার উন্ডেলা গ্রামে নবরাত্রির গারবা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে। নির্যাতিতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপ করেছিল। পরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

খেদা এলাকার জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার রাজেশ গাধিয়া আল–জাজিরাকে বলেন, গারবা অনুষ্ঠানটি স্থানীয় একটি মসজিদের কাছে আয়োজন করায় মুসলমান লোকজন আপত্তি জানিয়েছিলেন। এ নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে তাদের উত্তেজনা তৈরি হয়।

গাধিয়া আরও বলেন, উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে মুসলিম ব্যক্তিরা সোমবার রাতে গরবা নাচ চলার সময় পাথর ছুড়লে কমপক্ষে সাতজন হিন্দু আহত হন। এর মধ্যে দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের খুঁটিতে বেঁধে লাঠি দিয়ে মারা হচ্ছে। তাদের মারধরকারীরা সাধারণ পোশাকের পুলিশ বলে জানা গেছে। মারধরের ঘটনার চারপাশে স্থানীয়দের ভিড় করে উল্লাস করতে এবং নির্যাতিতদের হাত জোড় করে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে দেখা গেছে।

ভিডিওটি নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়ার পর রাজ্যের পুলিশ প্রধান আশিস ভাটিয়া বৃহস্পতিবার তদন্তের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘আমি একটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি এবং বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। আমরা অভিযোগের গুরুত্বের ওপর নির্ভর করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব।’

এনডিটিভি জানিয়েছে, ঘটনার তদন্তকারী একটি প্যানেল আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পুলিশের কাছে তার প্রতিবেদন জমা দেবে। ভিডিওগুলির সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযুক্ত পুলিশদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খেদার ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ ভিআর বাজপাই বলেন, ‘গরবা শুরু হলে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা জড়ো হয়ে অনুষ্ঠানটি থামানোর চেষ্টা করে। যখন লোকেরা থামেনি, তখন তারা পাথর ছুঁড়ে মারতে শুরু করে। ঘটনার একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত তেরো জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

পুলিশের তথ্য অনুসারে, এ ঘটনায় ৪৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৮ জন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সবাই মুসলিম।

(ঢাকাটাইমস/০৭অক্টোবর/এসএটি)