দ্বিতীয় দফায় হামলার শিকার ছাত্র অধিকারের নেতাকর্মী, পুলিশের হাতেও আটক ২০

প্রকাশ | ০৭ অক্টোবর ২০২২, ২৩:০১ | আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২২, ১০:১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জেরে দ্বিতীয় দফায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। এরপর সেখান থেকে সংগঠনটির আহত নেতাকর্মীসহ ২০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে তাদের আটক করা হয়।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বিকালে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণসভায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। সভায় অংশ নেওয়া ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা হামলায় আহত হন।

হামলায় আহত ১২ নেতাকর্মীকে তাৎক্ষণিক ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাদের দেখাশোনা করছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের আরও কয়েকজন কর্মী। তারা জানান, আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে ছাত্রলীগ তাদের ওপর আবার হামলা চালায়।

বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হামলার বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান বলেন, ‘যারা এখানে এসেছে তারা সবাই বহিরাগত। ঢাবি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা চায় না। আমরা হামলা করিনি। আয়োজকরা ঢাবি শিক্ষার্থী কি না, জানতে চাইলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’

ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা অভিযোগ করেন, দ্বিতীয় দফায় পুলিশের উপস্থিতিতে হাসপাতালেই ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। পরে পুলিশ আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মীকেই আটক করে থানায় নিয়ে যায়। 

আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির তারিকুল ইসলাম, নাজমুল হাসান, সানাউল্লাহ, মামুনুর রশীদ, তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আখতার, সেক্রেটারি আকরাম, ইউসুফ রাকিব, আবু কাওসারের নাম উল্লেখ করেন তিনি।

শাহবাগ থানার ওসি নূর মোহাম্মদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছাত্র অধিকার পরিষদের ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। বিকালের ঘটনার বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। তা আমলে নিয়ে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। তাঁরা সবাই বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে তিনজন পলাতক।

(ঢাকাটাইমস/০৭অক্টোবর/কেএম)