ঝুঁকি নিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের সাঁকো পারাপার

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০২২, ১০:০৭ | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২২, ১১:৫৭

আশরাফুল হক গোলাপ, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা)

নেত্রকোনার কেন্দুয়ার ১২ নং রোয়াইল আমতলা ইউনিয়নে সুতি নদীতে কোনো সেতু না থাকায় বাঁশের সাঁকো দিয়েই ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত করতে হয় ওপাড়ে থাকা রাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের।

সুতি নদীতে বর্ষাকালে পানি বেড়ে যাওয়ায় কলাগাছের ভেলা আর ডিঙ্গি নৌকাই হয় পারাপারের একমাত্র ভরসা। তখন প্রচণ্ড স্রোতে জীবনবাজি রেখেই স্কুলে আসতে হয় শিশুদের।

পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া সায়েম নামে এক শিক্ষার্থী জানায়, নদীর দক্ষিণ পাড়েই তার বাড়ি। স্কুল থেকে বাড়ির দূরত্ব কয়েকশ গজ। বাড়ির কাছে আর কোনো বিদ্যালয় নেই। তাই বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতে হয়।

সায়েম আরো জানায়, নদীতে যদি একটি পাকা সেতু থাকত তাহলে আমরা নিশ্চিন্তে স্কুলে যাওয়া আসা করতে পারতাম।

হলুদ মিয়া নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে সব সময়ই আতঙ্কে ও দুশ্চিন্তায় থাকি। প্রায় ছেলেমেয়েরা বই-খাতা ভিজিয়ে কান্না করে বাড়ি ফেরে। একটি পাকা সেতু হলে শিক্ষার্থীরা যেমন নির্বিঘ্নে স্কুলে আসা-যাওয়া করবে, তেমনি এলাকার সাধারণ মানুষের চলাচলের পথ ও সুগম হবে।

উপজেলার রাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে জানান, বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৩১ জন। তার মধ্যে বিদ্যালয়ের অর্ধেকের বেশি  শিক্ষার্থীই নদীর ওই পাড়ের বাসিন্দা। সীমাহীন কষ্ট করে প্রতিদিন তারা স্কুলে আসে।

তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বৃষ্টি বাদলে তাদের কষ্টের সীমা থাকে না। জীবনবাজি রেখে তারা স্কুলে আসা-যাওয়া করে। তিনি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দ্রুত একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানান।

এ বিষয়ে উপজেলার রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান আকন্দ ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমি পরিষদে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য একটি মাটির রাস্তা করে দিয়েছি। স্কুলের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের দুর্দশার বিষয়টি এমপি মহোদয় জানেন। আশা করছি, শিগহির ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় হতে স্কুল সংলগ্ন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।

কেন্দুয়া উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমি মাত্র কয়েকদিন আগে যোগদান করেছি। স্কুলের শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপারের বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শফিকুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, শিশুরা যাতে নিশ্চিন্তে এবং নির্ভয়ে স্কুলে যেতে পারে এজন্য দ্রুত একটি পাকা সেতু দরকার।

(ঢাকাটাইমস/১১অক্টোবর/এলএ/এসএম)