জনগণ সত্যিই অসহায়!

প্রকাশ | ১৬ অক্টোবর ২০২২, ১৪:১৭

আনিস আলমগীর

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া তো আছেই, গত আগস্ট মাসে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে সরকার সারাদেশে দ্রব্যমূল এবং সেবা খাতে যে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে সেটি এখন তেলের দাম কমালেও কমবে না।

আজ পত্রিকায় দেখলাম, খাবার কিনতেই হিমশিম অবস্থা দেশের ৬৮% মানুষের। ডব্লিউএফপির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, খাবার কিনতে সম্পদ বিক্রি করছেন মানুষ। বড় অংশ করছে ঋণ।

এদিকে ব্যাংকে টাকা রেখে কোনো লাভ পাচ্ছে না। সুদের চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি। ব্যাংকে টাকা রাখলে গড়ে সুদ পাওয়া যায় ৪ শতাংশের সামান্য বেশি। সরকারি হিসাবেই মূল্যস্ফীতি এখন ৯ শতাংশের বেশি। এ অবস্থা ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

ব্যাংকে টাকা জমিয়ে যদি লাভ না হয় তাহলে ব্যাংক থেকে টাকা সরিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (লিজিং) রাখবেন সে ভরসায়ও নেই। সেখানে সুদ বেশি সত্য, কিন্তু মূল টাকা ফেরত পাওয়া যাবে কি না সেই আশঙ্কা ঢুকে গেছে মানুষের মনে। কারণ, মনিটরিং এর অভাবে লিজিং প্রতিষ্ঠানের পিকে হালদাররা মানুষের জমানো টাকা খেয়ে ফেলে। মূল টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য অনেক গ্রাহক মাসের পর মাস ঘুরছেন।

এদিকে মুদ্রার দরপতন ঠেকাতে বাংলাদেশসহ এশিয়ান সরকারগুলো জমানো ডলার খরচ করেই চলছে। গত মাসে তারা পাঁচ হাজার কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যয় করেছে। বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন ২৮.১৩ বিলিয়ন। আর দেশের ঋনের পরিমাণ ১০০ বিলিয়নের কাছাকাছি।

একদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখা এবং আরেক দিকে মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে কঠোর মুদ্রানীতি। এমন সময় রাষ্ট্র পরিচালনায় হেরফের হলে সরকার ডুবতে সময় লাগে না।

সরকার ডুবলে জনগণের কি লাভ!তাদেরকে উদ্ধার করবে নুরু দুরু রাজনীতির নতুন টোকাইরা? জামাত- হেফাজতি হুজুররা? বামদের উপর ভরসা তো নেই বহু আগেই। তাহলে কি জনগণকে উদ্ধার করার ক্ষমতা আছে এখন বিভাগে বিভাগে জনসভায় ব্যস্ত, খুনের দায়ে দণ্ডিত পলাতক নেতা তারেক জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপির? আরেক দফা হাওয়া ভবন, খাওয়া ভবন, জঙ্গী রাষ্ট্র, মারামারি কাটাকাটি দেখা!

বাংলাদেশের জনগণ সত্যি অসহায় এখন!

দুর্নীতি, সর্বত্র অব্যবস্থাপনা, আত্মীয় তোষণ, কমপক্ষে এক ডজন আনাড়ি, অথর্ব মন্ত্রী দিয়ে পরিচালিত বর্তমান সরকারের ব্যর্থতার বিপরীতে তারা যদি পরিবর্তন চায়, ভরসা করার মতো কোনো বিকল্প শক্তিও তাদের হাতে নেই।

এই শূন্যতা পূরণ কিভাবে সম্ভব?

লেখক: সাংবাদিক