পদ্মা চরের কাশবন ঘিরে ইলিশ শিকারিদের আস্তানা

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর
 | প্রকাশিত : ২২ অক্টোবর ২০২২, ১৩:৩৬

মা ইলিশ সংরক্ষণে সরকারের নিষেধাজ্ঞাসহ বিশেষ অভিযান চলছে। তবে এর মধ্যেও মাদারীপুরের শিবচর, শরীয়তপুরের জাজিরা, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং, ঢাকার দোহার, ফরিদপুরের সদরপুরসহ পদ্মা নদীর জলরাশি ও চরগুলোতে প্রশাসন চলে গেলেই শুরু হচ্ছে ইলিশ নিধনের মহোৎসব। ধরা পড়ছে ডিমওয়ালা মা ইলিশ। সাথে জাটকাও ধরা পড়ছে।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ইলিশ নিধনে সরকারের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে অভিযানের শুরু থেকেই জেলার শিবচরের পদ্মা নদী ও সংলগ্ন চরগুলোতে প্রশাসনের অভিযান চলছে। অভিযানে কয়েকটি আস্তানার অর্ধশত অস্থায়ী স্থাপনাও উচ্ছেদ করেছে। চলছে শিফটভিত্তিক ডিউটি। এরই মাঝে সুযোগ পেয়েই জেলেরা নদীতে নেমে পড়ছে। প্রতিনিয়ত প্রশাসন নতুন নতুন কৌশলে অভিযান চালিয়ে ইলিশ শিকারিদের জেল-জরিমানা, অস্থায়ী আস্তানা উচ্ছেদ করলেও থামেনি ইলিশ শিকারিদের দৌরাত্ম্য। পদ্মা নদীতে ওঁৎ পেতে রয়েছে ইলিশ শিকারিরা। আর ইলিশ শিকারিরা পদ্মা নদীর বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলের কাশবনগুলোকে বেছে নিয়েছে আশ্রয়স্থল হিসেবে। ক্রেতারা নানা উপায়ে পৌঁছাচ্ছেন প্রত্যন্ত এ এলাকাগুলোতে। নদী পাড়ে কাশবনে বসেছে অস্থায়ী বা তাবু টানিয়ে হাটবাজার-আস্তানা।

মাদারীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝাঁ জানান, জেলার শিবচরের পদ্মা নদী ও সংলগ্ন চরগুলোতে প্রশাসনের অভিযান চলছে। অভিযানে কয়েকটি আস্তানার অর্ধশত অস্থায়ী স্থাপনাও উচ্ছেদ করেছে। তবে ভাটি অঞ্চলে কোস্টগার্ড, নেভি ও নৌ-পুলিশ নদীতে সার্বক্ষণিক থাকায় উজানের এ অঞ্চলের নদীতে এখন ইলিশের ছড়াছড়ি হওয়ায় জেলেরা নিধন যজ্ঞে নেমেছে। দূর চরের যে এলাকাগুলোতে সড়ক যোগাযোগ নেই সেখানেই বসছে বাজার। কাশবনগুলোতে গড়ে তোলা হয়েছে জেলেদের আবাসস্থল ও আড়ৎ। সেগুলোকে টার্গেট করে মাঝেমাঝেই চলে অভিযান।

মৎস কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝাঁ আরো বলেন, আমরা প্রতি বছর ইলিশ সংরক্ষণ উপলক্ষে অভিযান চালাই। এসময় অনেক অবৈধ মৎস্য শিকারিকে ধরে জেল-পরিমাণও করে থাকি। তারপরেও কৌশলে তারা ইলিশ ধরে। আমরা চেষ্টা করি তাদের শাস্তির আওতায় আনতে। পদ্মার চরাঞ্চলে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

কাঠাঁলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান সহসিন উদ্দিন সোহেল বেপারী বলেন, পদ্মার চরে কাশবনের ফাঁকে মাছ ধরে সেখানেই বিক্রি হচ্ছে। মাঝে মাঝে অভিযান হলে তারা সরে যায়। যে কারণে ইলিশ নিধন বন্ধ হচ্ছে না। যদি নিষেধাজ্ঞার সময় প্রতিনিয়ত টহল পুলিশ থাকে, তাহলে কার্যকরভাবে ইলিশ ধরা বন্ধ হবে। তাই প্রশাসনের কাছে এই কয়েকদিন চরে অস্থায়ী ক্যাম্প করে টহল দেয়ার অনুরোধ করছি।

পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, মাছ শিকারিরা যতই কৌশলী হোক না কেন, জেলা পুলিশ তৎপর রয়েছে। যে কোন অভিযানে পুলিশ মাঠে নামতে প্রস্তুত। প্রতিনিয়ত আমরা চেষ্টা করছি তাদের আইনের আওতায় আনার। কোনভাবেই সরকারের এই মহৎ উদ্যোগকে ভেস্তে যেতে দেব না।

জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, পদ্মা নদীর কাশবনগুলোতে কৌশল করে জেলেরা মাছ ধরে বিক্রি করে, সেটা জেনে আমি নিজে উপস্থিত হয়ে অভিযান করেছি। কয়েকটি আস্তানা বেরও করেছি। তবে কৌশলে প্রশাসনের আসার সংবাদ পেয়ে জেলেরা পালিয়ে যায়। আমরা তারপরেও চেষ্টা করছি কোনভাবেই যেন তারা মা ইলিশ ধরতে না পারে।

মা ও জাটকা ইলিশ সংরক্ষনে সরকার ঘোষিত ইলিশের ডিম ছাড়ার মৌশুমে নিধন বন্ধে সার্বক্ষণিক অভিযান ছাড়াও কোস্টগার্ড ও নেভি নদীতে ও চরে স্থায়ীভাবে নিয়োগের দাবি ইলিশ প্রিয় সাধারণ মানুষের। চলতি অভিযানে জেলার শিবচরেই প্রায় ১০০ জেলেকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২২অক্টোবর/এলএ/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফেসবুক আইডি ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

পতেঙ্গায় ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ

চট্টগ্রামে ঈদকে সামনে রেখে জালনোট চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্রুতগতির লেনে যাত্রী নামানোর অপরাধে ৩৩ যানবাহনকে মামলা 

বরগুনা প্রেসক্লাব দখলের মামলায় ৭ জন কারাগারে  

পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে তাহিরপুরের শহীদ সিরাজ লেক

ঝিনাইদহে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :