ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে যমুনা পাড়ের মানুষের

ফরমান শেখ, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)
 | প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর ২০২২, ১২:১১

প্রভাবশালীরা যত্রতত্রভাবে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন। শীত-বর্ষাসহ সব ঋতুতেই অবাধে বালু উত্তোলনে কর্মযজ্ঞে মেতে থাকেন বালুখেকোরা। প্রশাসন এসব বন্ধে মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলনের কাজে শ্রমিকদের জেল-জরিমানাও করে থাকেন। কিন্তু বালুখেকোরা থাকেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এমন অভিযানকে লোক দেখানো অভিযান হয় বলে মনে করেন নদী ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ।

চলতি মৌসুমে কমপক্ষে ছয়বার টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যতবারই পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ততবার ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটায় নদী পাড়ের মানুষ। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে গাবসারা, অর্জুনা, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল এ চারটি ইউনিয়নে এ বছর শতশত ঘরবাড়ি ও নানা স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এ কারণে নদীর গতিপথ পরির্বতন হচ্ছে। এমন ভাঙন ও গতিপথ পরিবর্তনের একটাই কারণ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন।

সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহ আগে হঠাৎ করে যমুনার পানি বৃদ্ধি পায়, বেড়ে যায় ভাঙনের তীব্রতা। ভাঙনে শতাধিক ঘরবাড়ি ও স্কুলসহ আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে নদীপাড়ের মানুষ। অনেকেই রাস্তার পাশে বা স্বজনদের বাড়ি আশ্রয় নিয়েছে। ড্রেজার বসিয়ে নদীর কিনারে বালুর স্তুব করে রেখেছে বালুখেকোরা। দেখলেই মনে হবে এ যেন বালুর পাহাড়।

উপজেলার চারটি ইউনিয়নে কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া, জিগাতলা, খানুরবাড়ী, চিতুলিয়াপাড়া, কোনাবাড়ি, পাতিতাপাড়া, গাবসারা, অর্জুনা, বাসুদেবকোল, ভদ্রশিমুল, তারাই, কুঠিবয়ড়া ও রায়ের বাসালিয়াসহ প্রায় অর্ধশতাধিক এলাকায় এ বছর ভাঙনের কবলে পড়েছে। এতে করে আতঙ্কে রাত পাড় করেন নদী পাড়ের মানুষ।

জানা যায়, প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত। নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হলেও তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পান না। তাছাড়া প্রতি বছরের মতো এবারো বালুখেকোরা যমুনার জেগে উঠা চর কেটে বিক্রি করা শুরু করছেন।

ভাঙনের শিকার ফজল বলেন, ক্ষমতাশীল দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অবাধে বাল্কহেড ও বাংলা ড্রেজার বসিয়ে চরাঞ্চলের ফসলি জমি কেটে বালুর পাহাড় করেছে। বালুখেকোরা এখন কৌশলও পরিবর্তন করেছে। তারা এখন রাতের আঁধারে বালু উত্তোলনও মহোৎসবে মেতে উঠেছে। ফলে আমাদের বসতভিটা বিলীন হচ্ছে। বালু উত্তোলন এখন যেন আমাদের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান বলেন, অবৈধ বালু ঘাট বা মহলের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ভূঞাপুর উপজেলার চিতুলিয়াপাড়া ও কষ্টাপাড়া এলাকায় ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ফেলার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমোদনের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হয়ে আসলে অচিরেই ভাঙন কবলিত এলাকায় জিওব্যাগ ফেলা হবে।

(ঢাকাটাইমস/০৭নভেম্বর/এলএ/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :