বাগেরহাটে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা হত্যায় গ্রেপ্তার ৯

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০২২, ১২:০৪ | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২২, ১৬:০৯

বাগেরহাট প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

বাগেরহাটে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম ভূঁইয়া তানু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় দায়ের করা হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ৮ জনসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহ্নত একটি পিস্তল, গুলি ও ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।

শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলা বালিপাড়া গ্রাম থেকে থেকে অস্ত্রসহ ওই ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে তানু ভূঁইয়াকে হত্যার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা বাদী হয়ে ফরিদ শেখকে প্রধান করে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জনকে আসামি করে বাগেরহাট মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রবিবার বেলা ১২টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বাগেরহাট জেলার পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

এসময়ে বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার  হেডকোর্য়াটার) রাসেলুর রহমান, বাগেরহাট সদর মডেল থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের গনমাধ্যম শাখার মুখপাত্র এ এস এম আশরাফুল আলমসহ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে একটি পিস্তল, একটি মাগজিন এবং একটি গুলি রয়েছে।

আসামিরা হলেন, ফরিদ শেখ (২৮), মনির (২৬), রাতুল (২৭), সিরাজুল (২৭), আল আমিন (৩০), সুমন (২৬), সোহাগ (২৫), মুকুল শেখ (৫৩) এবং কবির (৫০)। এদের সবার বাড়ি বাগেরহাট শহরের পূর্ব বাসাবাটি এলাকায়। এরমধ্যে কবির শেখ বাদে সবাই হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের বলেন, বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি এলাকায় যে হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হয়েছে তা স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রে করে ঘটেছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলা বালিপাড়া গ্রাম থেকে থেকে অস্ত্রসহ ওই ৯জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই হত্যাকান্ডে যে অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে তা উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জনকে আসামি করে বাগেরহাট মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তার হওয়া ৯জনের মধ্যে ৮ জন এজাহারনামীয়। বাকি একজন সন্দেহভাজন। এই হত্যাকান্ডটি কোন রাজনৈতিক আধিপত্য নয় এটি স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হয়েছে। ঘটনার পর তদন্ত করতে যেয়ে দেখা যাচ্ছে নিহত তানুর সঙ্গে এদের পূর্ব বিরোধ ছিল সেই বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছি। এই হত্যাকান্ডে এখন পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাইনি। তানু স্বেচ্ছাসেবকদলের বহিষ্কৃত নেতা ছিলেন। তিনি ২০২১ সালে দল থেকে বহিষ্কার হন। এই হত্যাকান্ডে জড়িত অধিকাংশ আসামীকেই আমরা ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন,যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা সবাই একে অপরের প্রতিবেশি, সবাই পাশাপাশি বসবাস করেন। এই ঘটনার জন্য আসামীরা অনুতপ্ত। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত: গত শুক্রবার রাত পৌনে দশটার দিকে বাগেরহাট শহরের পূর্ব বাসাবাটি পদ্মপুকুরপাড় এলাকায় দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নূরে আলম ভূঁইয়া তানু (৩৫) নিহত হন। হত্যার ঘটনায় স্থানীয় ফরিদ নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে তানুর পরিবার। ঘটনার পরপরই এই হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত রয়েছে তা নিশ্চিত হয় পুলিশ। এরপর পুলিশের একাধিক দল জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করে। খুব শিগগির তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে আশ করছিল পুলিশ।

(ঢাকাটাইমস/১৩নভেম্বর/এসএ/এআর)