খেজুর রস ও গুড় সংরক্ষণের ভাঁড় তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা
| আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২২, ১৭:২৮ | প্রকাশিত : ১৬ নভেম্বর ২০২২, ১৭:০৬

শীতকালে খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চুয়াডাঙ্গার গাছিরা। গাছিদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেজুরের রস ও গুড় সংরক্ষণে পোড়া মাটির পাত্র ভাঁড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার মৃৎশিল্পীরা।

সরেজমিনে জেলার সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের গড়াইটুপি গ্রামে দেখা যায়, বংশ পরম্পরায় পাল সম্প্রদায়ের মৃৎশিল্পীরা এ আদি পেশাকে আঁকড়ে ধরে আছেন। এখান থেকে জেলা ছাড়িয়ে জেলার বাইরেও সরবরাহ করা হয় ভাঁড়সহ মাটির বিভিন্ন নান্দনিক জিনিসপত্র।

সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের গড়াইটুপি গ্রামের মৃৎশিল্পীদের দেখা গেছে হাতের নিখুঁত ছোয়ায় ভাঁড় তৈরি করছেন। ছাঁচে ভাঁড় তৈরির দৃশ্যটি খুবই নান্দনিক ও মনোমুগ্ধকর। ভাঁড় তৈরির দৃশ্য দেখতে যে কেউ থমকে দাঁড়াবেন। এই এলাকায় নারী ও পুরুষ উভয়কেই ভাঁড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছোট সাইজের ভাঁড় ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মাঝারি সাইজ ৮০ থেকে ১০০ টাকা এবং বড় সাইজের ভাঁড়গুলো ১৫০ টাকা জোড়া দরে বিক্রি করে থাকেন।

ভাঁড় তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে রাম চন্দ্র পাল নামের একজন মৃৎশিল্পী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ভাঁড় তৈরির প্রধান উপকরণ এঁটেল মাটি। এই মাটি সংগ্রহ করে পানি দিয়ে ভিজিয়ে কোদাল দিয়ে কয়েকবার ঝুরঝুরে করা হয়। তারপর পা দিয়ে মোলায়েম করতে হয়। মোলায়েম মাটি বোলে দিয়ে বালির মিশ্রণে চাপড় বানানো হয়। এর পর ছাঁচে দিয়ে হাতের কারুকার্যে ভাঁড়ের কানাসহ উপরিভাগ তৈরি করা হয়। এই ছাঁচে ভাঁড়ের নিচের অংশ তৈরি করার পর দুটো অংশকে জোড়া লাগানো হয়। তারপর দুদিন রোদে শুকানো হয়। রোদে শুকানো ভাঁড় আগুনে পোড়ানো হয়।

গড়াইটুপি গ্রামের শ্রী নিতাই চন্দ্র পাল ঢাকা টাইমসকে জানান, শীতকালে খেজুরের রসের উপর ভিত্তি করে মৃৎশিল্পীদের কর্মব্যস্ততা বাড়লেও বছরের অন্যান্য সময় তাদের অলস সময় পার করতে হয়। কালের বিবর্তনে আর আধুনিক যন্ত্রপাতির ছোয়ায় মৃৎশিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। এই পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা ভবিষ্যৎ কোনো সম্ভবনা দেখতে পাচ্ছে না। দিন দিন যে হারে খেজুরগাছ কমছে, তাতে খেজুরগাছ সংরক্ষণ ও নতুন করে রোপণ করার উদ্যোগ না নিলে গাছিও থাকবে না। এ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ নিলে দুটো পেশাকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হতে পারে।

(ঢাকা টাইমস/১৬নভেম্বর/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :