ইস্তাম্বুলে বিস্ফোরণ: সিরিয়া ও ইরাকের লক্ষ্যবস্তুতে তুরস্কের বিমান হামলা
গত সপ্তাহে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গত সপ্তাহে বোমা বিস্ফোরণে ছয়জন নিহত এবং ৮০ জনের বেশি আহত হয়েছিল। তারই জের ধরে এবার উত্তর সিরিয়া এবং ইরাকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে তুর্কি সামরিক বিমান। খবর আল-জাজিরার।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রবিবার টুইটারে এক বিবৃতিতে অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। রাতের অপারেশনে একটি সামরিক বিমান উড্ডয়নের ছবিসহ টুইটারে মন্ত্রণালয় বলেছে, হিসাব করার সময় এসেছে। বিশ্বাসঘাতক হামলা যারা করেছে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।
আঙ্কারা ১৩ নভেম্বর ইস্তাম্বুলে বোমা হামলার জন্য নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) এবং সহযোগী সিরিয়ান কুর্দি গোষ্ঠীগুলিকে দায়ী করেছে৷ তবে কুর্দি যোদ্ধারা জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
আরেকটি পোস্টে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘সন্ত্রাসীদের হটবেড’ ধ্বংস করতে নির্ভুল ‘স্ট্রাইক’ ব্যবহার করা হয়েছে। জাতিসংঘের সনদের ৫১ অনুচ্ছেদ থেকে উদ্ভূত আমাদের আত্মরক্ষার অধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পেন্স কিলিক বিমান অভিযানটি ইরাক এবং সিরিয়ার উত্তরের অঞ্চলগুলিতে পরিচালিত হয়েছিল যেগুলি সন্ত্রাসীদের দ্বারা আমাদের দেশে আক্রমণের জন্য ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।’
তুরস্ক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই পিকেকে একটি ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে। তবে সিরিয়ায় আইএসআইএল (আইএসআইএস) গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে জোটবদ্ধ সিরিয়ার কুর্দি গোষ্ঠীগুলির অবস্থান নিয়ে দ্বিমত পোষণ করে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর শুক্রবার বলেছিল, তারা তুরস্কের সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের আশঙ্কা করছে, তাদের নাগরিকদের উত্তর সিরিয়া ও ইরাকে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে।
যদিও আঙ্কারা রাতারাতি অভিযানের সঠিক বিবরণ দেয়নি। কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) বলেছে, তুর্কি বিমান হামলা উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কোবানে (আইন আল-আরব) আঘাত করেছে।
তুর্কি সীমান্তের কাছে একটি কুর্দি সংখ্যাগরিষ্ঠ শহর কোবানে ২০১৪ সালের শেষের দিকে আইএসআইএল (আইএসআইএস) দ্বারা দখল করা হয়েছিল এবং পরের বছরের শুরুতে কুর্দি যোদ্ধারা তাদের তাড়িয়ে দেয়।
এসডিএফ মিডিয়া সেন্টারের প্রধান ফরহাদ শামি টুইট করেছেন, ‘কোবানে, যে শহরটি আইএসআইএসকে পরাজিত করেছিল, সেটি তুর্কি দখলদার বিমানের বোমা হামলার শিকার হয়েছে।’
এসডিএফ মুখপাত্র পরে বলেছিলেন, উত্তর সিরিয়ার অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের (আইডিপি) জনবহুল দুটি গ্রামেও হামলা করা হয়েছে। তুর্কি দখলদার বিমান আল-বেইলোনিয়া গ্রামে গোলা বর্ষণ করছে যেটি আফরিন আইডিপিদের দ্বারা ২০১৮ সালে আফরিন থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।’
বিমান হামলার ফলে ‘মৃত্যু ও আহত’ হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে হতাহতের নির্দিষ্ট সংখ্যা তিনি বলেননি।
এসডিএফের প্রধান মাজলুম আবদি টুইটারে লিখেছেন, আক্রমণগুলি পুরো অঞ্চলকে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং লক্ষ্যবস্তু এলাকার লোকজনকে তাদের বাড়িতে থাকতে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে।
সিরিয়া বা ইরাকের সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
২০১৬ সাল থেকে তুরস্ক সিরিয়ায় তিনটি বড় আন্তঃসীমান্ত অভিযান শুরু করেছে এবং ইতিমধ্যে উত্তরের কিছু অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করেছে।
(ঢাকাটাইমস/২০নভেম্বর/ এসএটি)