কলাপাড়ায় মাঠজুড়ে দোল খেলছে সোনালি ধানের শীষ, কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি

প্রকাশ | ২৪ নভেম্বর ২০২২, ১২:০৪ | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২২, ১২:৪৩

এস কে রঞ্জন, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)

পটুয়াখালীর বলাপাড়া উপজেলায় মাঠ জুড়ে দোল খেলছে সোনালি ধান। কৃষকরা পাকা ধান ঘরে তুলতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। কৃষক পরিবারের চোখে মুখে লেগে আছে স্বপ্ন পূরণের আশা। ১৫-২০ দিন পর গ্রামীণ জনপদে শুরু হবে ধান কাটা, মাড়াই ও নতুন ধান ঘরে তোলার উৎসব।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গোটা উপজেলায় দুটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নে কৃষক পরিবার রয়েছে ৩৫৫০০। মোট জমি ৪৯২১০ হেক্টর। এ বছর ৩১২৪০ হেক্টরে আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ২২৫৫০ হেক্টরে মৌসুমি উফশী রোপা আমন ও ৮১৫০ হেক্টর জমিতে মৌসুমি স্থানীয় রোপা আমন ধানের চাষ করেছেন কৃষকরা। এছাড়া সবজি চাষ করা হয়েছে ৫৪০ হেক্টর জমিতে। তবে ঘূর্নিঝড় সিত্রাংয়ে কারনে ধানের আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ জমির পরিমান ৯২১ হেক্টর। আংশিক ক্ষতি ৫% হারে সম্পুর্ন ক্ষতির পরিমাণ ৪৬.০৫ হেক্টর। এছাড়া সবজি ফসলে ৫৪ হেক্টর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০% হারে সম্পূর্ণ ক্ষতি ১০.০৮ হেক্টর বলে জানা গেছে।   

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ জুড়ে কাঁচা-পাকা ধানের ফসলি ক্ষেত যেন দিগন্ত ছুঁয়ে গেছে। কৃষকের ঘরে ঘরে শুরু হবে ধান তোলার পালা। ধান কাটার জন্য নতুন কাস্তে তৈরি করতে আছে অনেকে। কেউ আবার পুরাতন কাস্তে মেরামত করতে দিচ্ছে কামারের দোকানে। কেউ কেউ মেশিন দিয়ে ধান কাটার জন্য প্রস্ততি নিযে রেখেছে। অনেকেই ধান রাখার জন্য বাড়ির আঙ্গিনা সুন্দর ভাবে পারিস্কার পরিচ্ছন্ন করেছেন। গোটা উপজেলার কৃষকদের যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। তবে ফরিয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীদের আনাগোনা আর তৎপরতায় ফসলের কাঙ্খিত মূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা।

কৃষক সুলতান গাজী জানান, গত বছর প্রতি ২৬৬ শতক জমি চাষাবাদ থেকে শুরু করে মাড়াই পর্যন্ত খরচ হতো ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এ বছর একই জমিতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া বাজারের দ্রব্যমুল্যের ঊর্ধ্বগতির কারনে ৭শ' থেকে ৮শ' টাকা মজুরিতেও শ্রমিক পাচ্ছেনা।

উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামের কৃষক রুহুল মৃধা বলেন, ঘুর্নিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষেতের তেমন ক্ষতি করতে পারেনি। সার-ওষুধ প্রয়োগ ও ক্ষেতের নিয়মিত পরিচর্যা করে এ পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে ফসল ভালো হবে।

নবীপুর গ্রামের কৃষক সোনা মিয়া বলেন, প্রথম দিকে বৃষ্টি না থাকায় জমিতে চাষ করতে একটু দেরি হয়েছে। তার পরও এ বছর ক্ষেতের ফসল ভাল।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমআরএম সাইফুল্লাহ বলেন, উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে কৃষকদের আমন ধানের ক্ষেতে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত ফসল সুন্দরভাবে কাটতে পারবে বলে তিনি জানান।

(ঢাকাটাইমস/২৪নভেম্বর/এআর/এসএ)