সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চাই রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ

প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০২২, ০৯:০১

এমএস নাঈম, ঢাকাটাইমস

আগামী বছরের ডিসেম্বরের শেষে কিংবা চব্বিশের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে সব রাজনৈতিক দলই মাঠে নেমেছে। বড়দলগুলো দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগে সম্মেলনের মাধ্যমে মূলত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নিজেদের পক্ষে ভোট চাইছেন। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাসহ ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেছে। ইভিএমে ভোটগ্রহণ করতে নতুন মেশিনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কেনার জন্য ইতোমধ্যে বাজেটও তৈরি করেছে ইসি।
তবে রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক না থাকায় সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন স্বয়ং প্রধান নির্বাচন কমিশনার। অন্যদিকে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাবেক নির্বাচন কমিশনাররাও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এমন আশঙ্কার সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সঙ্গে তারাও বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। নিজেদের মাঝে সংকট উত্তরণে সংলাপের বিকল্প নেই বলেও মনে করছেন তারা।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বড় দলগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক কথা না বলে নিজেদের মাঝে সদ্ভাব বজায় রাখা উচিত। নির্বাচন হওয়ার জন্য নিজেরা নিজেরা এমন কিছু বলা উচিত নয়, যাতে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। দলগুলোর ইচ্ছা হওয়া উচিত নির্বাচনকেন্দ্রিক। যাতে নিয়ম অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচনে মাঠ তৈরি হয়।’

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের বিষয়ে কারা ভূমিকা রাখতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সুশীল সমাজ আজকাল নিরপেক্ষ নয়। তারাও কোনো না কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি করে থাকে। ফলে সুশীলদের কথা অনেক দলই হয়তো শুনবে না। বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিরা এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে পারে। সংলাপের মাধ্যমেই রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের মাঝের এমন আক্রমণাত্মক ভাব কমে আসবে।’

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হানাহানি না কমলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’

‘নির্বাচন কমিশন হয়তো ভোটের আয়োজন করল, পরে যদি তারা একে অপরের প্রতি সম্মান না রেখে ফলাফল মেনে না নেয়, তখন কী হবে’- এ প্রশ্ন রাখেন এই কমিশনার।

সংলাপের জন্য নির্বাচন কমিশন চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এখনও অনেক সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি আন্তঃআলোচনা না হয়, সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কী করবে?’

দেশে পাওয়ারফুল সিভিল সোসাইটি নেই জানিয়ে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে আনতে এর আগেও ব্যক্তিগত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। দেশে সে রকমের পাওয়ারফুল সিভিল সোসাইটি নেই। সবাই কারো না কারো পক্ষে কাজ করে।’

রাজনৈতিক দলগুলোই পাওয়ারফুল সিভিল সোসাইটি তৈরি হতে দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রেশার ক্রিয়েট করতে পারে দেশে এমন কোনো ব্যক্তি নেই। এমন পাওয়ারফুল সিভিল সোসাইটি রাজনৈতিক দলগুলোই তৈরি হতে দেয়নি।’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ডায়ালগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ডায়ালগ যত করা যায়, ততই ভালো।’

(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/এফএ)