ভরা মৌসুমেও সবজির চড়া দামে হতাশ ক্রেতারা

প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০২২, ১৫:৫৩

পুলক রাজ, ঢাকা টাইমস

রাজধানীর বাজারে প্রতিটি পণ্যেরই দাম বাড়তি। ইতোমধ্যেই শীতের আবহ শুরু হয়ে গেছে। এই সময়ে স্বাভাবিকভাবেই কম দামে সবজি মিলবে, এমন প্রত্যাশা নিয়ে বাজারে যাচ্ছেন ক্রেতারা। কিন্তু আশাহত হয়ে এই ভরা মৌসুমেও চড়া দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। মাছের বাজারও আগের মতো চড়া। তবে ব্রয়লার মুরগি, খাসি ও গরুর মাংসের দাম কেজিতে ২০ থেকে ১০০ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে।

 

সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাষের কই মাছ প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, ছোট টেংরা প্রতি কেজি ৪০০ টাকা,  পাবদা ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাঙ্গাশের কেজি ২০০ টাকা, রুই মাছ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, ছোট বোয়াল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, টাকি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, ছোট কাতল ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, শোল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, ছোট কাঁচকি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, ছোট রূপচাঁদা প্রতি কেজি ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭০ টাকা থেকে ২০ টাকা কমে ১৫০ টাকা, খাসির মাংস এক হাজার টাকা  থেকে ১০০/৫০ টাকা কমে ৯০০/৯৫০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে কোনো কোনো দোকানে গুরুর মাংস ৭০০ থেকে ৫০ টাকা কমে ৬৫০ টাকায়ও কিনতে পারছেন ক্রেতারা। তবে সোনালি মুরগির কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, কক প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  

 

মুরগির ডিম প্রতিটি ১২ টাকা, হালি ৪৮ টাকা ও ডজন ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

এছাড়া খোলা চিনি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, প্যাকেট চিনির কেজি ১২৫ টাকা, দেশি মসুরের ডালের কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০ থেকে ১২৫ টাকা, পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৫০ টাকা, দেশি রসুন প্রতিকেজি মান ভেদে ৭০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, দেশি আদা প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, প্যাকেট আটা প্রতি কেজি ৭০ টাকা, প্যাকেট ময়দা প্রতি কেজি ৮০ টাকা ও খোলা আটা ৬৫ টাকা কেজি, খোলা ময়দা ৭৫ টাকা বিক্রি যাচ্ছে।

 

বাজারে ভোজ্যতেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা। আগে এক লিটার তেলের বোতল ছিল ১৭৮ টাকা। তেলের ৫ লিটারের বোতল আগে ছিল ৮৮০ টাকা। এখন পাঁচ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৯২৫ টাকায়।

 

হাতিরপুল কাঁচাবাজার এলাকার সবজি বিক্রেতা কাওসার আহমেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, করলা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ কেজি ৭০ টাকা, টমেটোর প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। সবজির বাজারে সব কিছুর চড়া দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। বিভিন্ন গ্রাম থেকে আমাদের কাছে সবজি পৌঁছাতে পৌঁছাতে দাম আর কমেনা।

 

হাতিরপুল কাঁচাবাজার এলাকার সবজি বিক্রেতা রুহুল আমিন ঢাকা টাইমসকে বলেন, গত সপ্তাহে পেঁপে ৩০ টাকা ছিলো কিন্তু আজকে প্রতিকেজি ৪০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার শসা, লম্বা বেগুন, শিম, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়স, পটল, ধুন্দুল, বরবটির প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এর চেয়ে কম দামে বিক্রি করলে আমাদের লোকসান হয়ে যাবে।

রুহুল আমিন বলেন, গোল বেগুন ৮০ থেকে ৯০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজিপ্রতি ৫০ টাকা, প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম শীতের মৌসুমে অন্তত দাম কমবে। কিন্তু তার উল্টো হয়ে গেছে।

 

হাতিরপুল কাঁচাবাজার এলাকার সবজি ক্রেতা মুহিত খন্দকার ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমি ভেবেছিলাম শীতে অন্তত সবজির দাম কমবে কিন্তু না কমে চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। আমি আজকে চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০ টাকায় কিনেছি, সাথে পাতাকপি, ফুলকপি, লাউ ৪০ থেকে ৭০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

 

মুহিত খন্দকার বলেন, শীতের সময়ে এতো বেশি দামে কখনোই আমি কিনিনি সবজি। বাজারে কাঁচ কলার হালি ৪০ টাকা,  লেবুর হালি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমি এক কেজি ইলিশ কিনেছি ১৪০০ টাকায়। তবে এক কেজি ওজনের ইলিশের প্রতি কেজি ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে এবং দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ১৮০০ টাকা কেজি বিক্রি করছে মাছ বিক্রিতারা।

(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/পিআর/কেএম)