বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রথম টিউব উদ্বোধন আজ

প্রকাশ | ২৬ নভেম্বর ২০২২, ০৮:৪২ | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২২, ১১:৪৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজ সম্পূর্ণ শেষ হওয়ায় এটির উদ্বোধন হবে আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করবেন। 

এ ব্যাপারে টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘টানেলের দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজের সমাপ্ত হয়েছে। শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে টিউব উদ্বোধন করবেন। পাশাপাশি টানেলস্থলেও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনীতিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।

টানেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, পুরো টানেলের অবকাঠামো (পূর্ত) নির্মাণ প্রায় শেষের পথে। ইতোমধ্যে দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজ সম্পূর্ণ শেষ এবং উত্তর টিউবের ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, টানেলের দক্ষিণ টিউবের মাধ্যমে আনোয়ারা থেকে শহরমুখী যানবাহন আসবে। এছাড়া উত্তর টিউবের পূর্ত কাজ ৯৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। উত্তর টিউবের মাধ্যমে শহর থেকে আনোয়ারামুখী যানবাহন যাবে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, দুটি টিউবের মধ্যে একটি টিউবের সিভিল কাজ শেষ হয়েছে। অন্য টিউবের সিভিল কাজ এখনো চলছে। সেই সঙ্গে গাড়ি চলাচলের জন্য সড়কের কাজও ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। পূর্তকাজ শেষ হলেও শুরুতে প্রকল্পে না থাকা বেশকিছু কাজ যুক্ত করতে হচ্ছে। এছাড়া, বর্তমানে টানেলের ভেতরের বৈদ্যুতিক সিস্টেম ও যন্ত্র স্থাপনের কাজসহ আনুষঙ্গিক কাজ চলমান রয়েছে। এখনো পর্যন্ত প্রকল্পের ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, টানেলের পূর্ত কাজ শেষ পর্যায়ে হলেও বিশেষায়িত প্রকল্প হওয়ায় নিরাপত্তাসহ আনুষঙ্গিক কিছু কাজ এখনো বাকি রয়েছে। যা এখনো চলমান রয়েছে। এছাড়া উভয় প্রান্তের এপ্রোচ সড়কের ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রকল্পের উদ্বোধন শেষেও কিছু কিছু কাজ বাকি থাকবে, এই কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে আবেদন করা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে, বিষয়টি এমন না।

বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে টানেলের প্রতিটি সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। দুই সুড়ঙ্গে দুটি করে মোট চারটি লেন থাকবে। মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক থাকবে। যার ৯৯ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। পরবর্তী সময়ে একই বছর প্রথম সংশোধনীতে ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা করা হয়। ওই সময়ে মেয়াদ ২০২০ সাল থেকে বাড়িয়ে ২০২২ সাল করা হয়। সর্বশেষ দ্বিতীয় সংশোধনীতে বঙ্গবন্ধু টানেলের মেয়াদ ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। সর্বশেষ নভেম্বরের প্রথম দিকে প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। এরই মধ্যে এটি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটিতে পাস হয়েছে। চলতি মাসের শেষ দিকে অথবা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে যা একনেকে উঠবে।

(ঢাকাটাইমস/২৬নভেম্বর/এলএ/ইএস)