ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় ঈশ্বরদীর ১২ কৃষক কারাগারে

ব্যাংক ঋণে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালত ৩৭ প্রান্তিক কৃষকের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাদের মধ্যে ঈশ্বরদীর ১২ কৃষককে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার বিকালে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের ঋণের মামলায় তাদের জেলে পাঠানো হয়েছে। মাত্র ২৫-৩০ হাজার ঋণের টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগে ব্যাংকের মামলায় এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এবং শুক্রবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ঈশ্বরদী থানা পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

কৃষকদের স্বজনদের অভিযোগ, ঋণের টাকা পরিশোধের পরও তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। পাবনা জেলা শহরের এলএমবি মার্কেটে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের জেলা কার্যালয়। শুক্রবার ওই কার্যালয় বন্ধ থাকায় এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। গ্রেপ্তার ১২ প্রান্তিক কৃষক হলেন, ঈশ্বরদীর সলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারি গ্রামের মনি মণ্ডলের ছেলে মাহাতাব মণ্ডল (৪৫), মৃত সোবহান মণ্ডলের ছেলে আবদুল গণি মণ্ডল (৫০), কামাল প্রামাণিকের ছেলে শামীম হোসেন (৪৫), মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে সামাদ প্রামাণিক (৪৩), মৃত সামির উদ্দিনের ছেলে নূর বক্স (৪৫), রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আকরাম (৪৬), শুকুর প্রামাণিকের ছেলে আলম প্রামাণিক (৫০), লালু খাঁর ছেলে মোহাম্মদ রজব আলী (৪০), মৃত কোরবান আলীর ছেলে কিতাব আলী (৫০), হারেজ মিয়ার ছেলে হান্নান মিয়া (৪৩), মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ মজনু (৪০) ও মৃত আখের উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান (৫০)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ৩৭ জন প্রান্তিক কৃষক বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক হতে ২৫-৩০ হাজার টাকা করে ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণের অর্থ ফেরত না দেওয়ার অভিযোগে ২০২১ সালে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। আদালত এসব কৃষকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, আদালত বুধবার তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কৃষকরা দাবি করেন ঋণের টাকা তারা পরিশোধ করেছেন। এরপরও কেন মামলা হলো, সে বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।

বাংলাদেশ কৃষক সমিতির পাবনা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে অনেকেই টাকা পরিশোধ না করে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ প্রান্তিক কৃষকের মাত্র ২৫ হাজার টাকা ঋণের জন্য জেল ও জরিমানা করা হচ্ছে। অবিলম্বে এসব প্রান্তিক কৃষকের বিনা শর্তে মুক্তির দাবি জানান তিনি।

উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান মালিথা কৃষক গ্রেপ্তারের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, কৃষকবান্ধব শেখ হাসিনা সরকারের আমলে প্রান্তিক কৃষকদের সামান্য ঋণের কারণে গ্রেপ্তার সত্যিই খুবই দুঃখজনক।

(ঢাকাটাইমস/২৬নভেম্বর/এসএ)