আয়াতকে হত্যার পর ৬ টুকরা: মাংসপিণ্ড উদ্ধার হয়নি তৃতীয় দিনেও

প্রকাশ | ২৭ নভেম্বর ২০২২, ২১:০২ | আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২২, ২১:২৯

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

চট্টগ্রামের ইপিজেডে পাঁচ বছর বয়সী শিশু আয়াতকে অপহরণের পর খুন করে লাশ ছয় টুকরো করে খালে-সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া খণ্ডিত দেহ উদ্ধারে খুনি আবিরকে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় দিনের মতো অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

গত ২৪ নভেম্বর রাতে সিপিজেডের আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকার বাসা থেকে আয়াতদের ভাড়াটিয়া আবির আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন থেকে চলা অভিযানে রক্তামাখা কাপড় ও সেন্ডেল উদ্ধার করা হলেও তিনদিনেও উদ্ধার হয়নি খণ্ডিত অংশ ।

রবিবার বেলা ১২টা থেকে তৃতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান নামে পিবিআইয়ের সদস্যরা। এর আগে, গত শনিবার আদালত থেকে আবিরকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি পায় পিবিআই।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উদ্ধার অভিযানে থাকা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, ‘আয়াতের খণ্ডিত মাংসপিণ্ডগুলো উদ্ধারে ডুবুরি দলের পাশাপাশি আমাদের টিমও কাজ করছে। আজ তৃতীয় দিনের মতো অভিযান চালানো হয়। এখনও কোন অংশই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।’

গত ২৫ নভেম্বর নিখোঁজের ১০ দিনের মাথায় আবির আলী নামের এক যুবককে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে সেই নিখোঁজ রহস্য উদঘাটন করে পিবিআই। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার আবির আলী স্বীকারও করেন— মুক্তিপণ দাবির জন্যই আবির আলী তার বাড়িওয়ালার নাতনিকে অপহরণ করে। মেয়েটি চিৎকার করায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং পরে লাশ গুম করতে আয়াতকে করা হয় ছয় টুকরো। আয়াতের খণ্ডিত মাংসপিণ্ডগুলোও ভাসিয়ে দেওয়া হয় সাগরে। তবে আসামি গ্রেপ্তারের পর খুনের ঘটনায় জড়িত এবং সব দায় স্বীকার করে। নিখোঁজের পর দিন ইপিজেড থানায় দায়ের হওয়া জিডিটি এখন মামলা হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।

গত ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার বন্দরটিলার এলাকার নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আলিনা ইসলাম আয়াত। এর পরদিন শিশুর বাবা সোহেল রানা এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করলেও কোন হদিস মিলেনি। নিখোঁজের দশ দিনের মাথায় শুক্রবার আবির আলী নামের এক যুবককে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে এ নিখোঁজ রহস্য উদঘাটন করে পিবিআই।

পিবিআই সূত্রে জানা যায়, আবির আলী মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে ঘটনার দিন বিকেলে আয়াতকে অপহরণ করে। পরে আয়াত চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে বাজারের ব্যাগে ভরে আকমল আলী সড়কের বাসায় নিয়ে ছয় টুকরো করে। তারপর কাট্টলীর সাগর পাড়ে ফেলে দেয়। গ্রেপ্তারের পর আবির আলী সব কিছু স্বীকার করে নেয়। মরদেহ টুকরো করার কাজে ব্যবহার করা বটি ও অ্যান্টি কাটার উদ্ধার করা হয়েছে আবির আলীর বাসা থেকে।

ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা ও সাহিদা আক্তার তামান্না দম্পতির মেয়ে আয়াত। তিনতলা ভবনের মালিক সোহেলের ওই এলাকায় একটি মুদির দোকান আছে। আয়াত স্থানীয় তালীমূল কোরআন নূরানী মাদরাসার হেফজখানার ছাত্রী ছিল।

(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/এআর)