যৌনরোগের চিকিৎসায় ফেলোশিপ কোর্স চালু করতে চায় বিএসএমএমইউ

প্রকাশ | ২৮ নভেম্বর ২০২২, ২০:০৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের মাধ্যমে সেক্সচুয়াল ডিস অর্ডারের চিকিৎসা চলছে। কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে বিছিন্নভাবে নয় বরং সমন্বিতভাবে এর চিকিৎসা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এজন্য আমরা একাডেমিক কাউন্সিলে সেক্সচুয়াল মেডিসিনের উপর ফেলোশিপ চালুর প্রস্তাব পাঠাবো। তারা অনুমোদন দিলে বিএসএমএমইউয়ে যৌন রোগ নিয়ে সমন্বিত ফেলোশিপ চালু করা হবে।

 

সোমবার বঙ্গবন্ধু বিএসএমএমইউর যৌন সমস্যা ও রোগের চিকিৎসা নিয়ে ‘সাউদ এশিয়ান সোসাইটি ফর সেক্সচুয়াল মেডিসিন ( এসএএসএসেম) স্কুল বাংলাদেশ-২০২২’  বিষয়ক  তিনদিন ব্যাপী কর্মশালার সমাপ্তি হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য এসব কথা বলেন।

 

কর্মশালায় বলা হয়, সারাদেশে   যৌন অক্ষমতায় (সেক্সচুয়াল ডিজঅর্ডার) অসংখ্য মানুষ ভুগেন। যৌন অক্ষমতার কারণে দাম্পত্য শান্তি দূর হয়ে যায়। সুস্থ জীবন যাপন ব্যাহত হয়। সামাজিক সৌহার্দ্যতা কমে আসে। একই সঙ্গে প্রজনন ক্ষমতা কমে আসায় জনসংখ্যার ভারসাম্যের পাশাপাশি বংশ রক্ষা ঝুঁকিতে পড়ে যায়। ডায়াবেটিসের আক্রান্ত পুরুষ রোগীদের  মাঝে ৬৩% ইরেক্টাল ডিসফাংশন হয়ে যায়। ডায়াবেটিস আক্রান্ত নারী রোগীদের মাঝে ২৮% রোগী এ্যাসেক্সচুয়ালিটিতে (যৌন বিমুখ সমস্যা) ভুগেন। এছাড়াও ডায়াবেটিস আক্রান্ত ৫০ বছর র্ঊর্ধ্ব পুরুষ রোগীদের ৫০% প্রি- ইজাকুলেশন (দ্রুত বীর্যপাত জনিত সমস্যা) হয়ে থাকে।

 

কর্মশালায় আরো বলা হয়, দেশে যৌন রোগ নিয়ে কবিরাজ, ফকির ও হারবাল ওষুধের অপব্যবহার হচ্ছে। আধুনিক চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে আসা রোগীরা বিচ্ছিন্নভাবে চিকিৎসা নিয়ে থাকে। এজন্য তাদের সঠিক পরিসংখ্যান করা সময়ের দাবি। বিছিন্নভাবে চিকিৎসা নেওয়ার ফলে রোগীরা সব সময় সঠিক সেবা পাচ্ছেন না। সময়ের প্রয়োজনে সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রয়োজন। এজন্য বিএসএমএমইউর মত  বড় প্রতিষ্ঠানের এ বিষয়ে ফেলোশিপ কোর্স চালুর দাবি রাখে।

 

বিএসএমএমইউয়ে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালাইড সাইন্সে সাউদ এশিয়ান সোসাইটি ফর সেক্সচুয়াল মেডিসিন তিন দিনব্যাপী সেক্সচুয়াল মেডিসিন কোর্সের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সারা দেশে থেকে ৫০ জন বিভিন্ন বিষয়ের চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন। এর আগে কর্মশালায় চারটি ফেজে সারা দেশ থেকে ২০০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেছেন।

 

কর্মশালা থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে বিভিন্ন রোগের কারণে মানুষ যৌনরোগে আক্রান্ত হলেও এর চিকিৎসা বিচ্ছিন্নভাবে স্ব স্ব ডিসিপ্লিনের মাধ্যমে করা হয়। এর মধ্যে সাউদ এশিয়ান সোসাইটি ফর সেক্সচুয়াল মেডিসিনের ছাতার নিচে বসে বাংলাদেশ ডার্মাটোলজিক্যাল সোসাইটি, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইউরোলজিক্যাল সার্জনস, বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটি,  বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাইক্রিয়াটিস্ট ও ওজিএসবি রোগীদের সেবা প্রদান করে আসছে।

 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির মহাসচিব সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম।

 

কর্মশালায় সাউদ এশিয়ান সোসাইটি ফর সেক্সচুয়াল মেডিসিনের সাবেক সভাপতি একেএম আনোয়ারুল ইসলাম, ভারতের অধ্যাপক ভেনকাটারামানা গোধা, ডা. ভাসান এসএস, ডা. টিএসএস রাও, ইতালির ডা. গিউভাননী করোনা, ডেনমার্কের অধ্যাপক আন্নামারিয়া গিরালডি,  তুরস্কের  অধ্যাপক ইজি ক্যাস সিরিফোগলু, পোল্যান্ডের অধ্যাপক মিখাইল লিই স্টারোভিজসহ দেশী বিদেশী বিভিন্ন বিষয়ের একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাউদ এশিয়ান সোসাইটি ফর সেক্সচুয়াল মেডিসিনের নির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ শামসুল আহসান। -বিজ্ঞপ্তি

(ঢাকাটাইমস/২৮ নভেম্বর/এএ/কেএম)