৬৭ বছর বয়সে এসএসসি পাস করলেন কবি কালাম

প্রকাশ | ২৯ নভেম্বর ২০২২, ১৩:৪৭

শেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ইচ্ছে থাকলে বয়স কোনো বাধা নয়, তা প্রমাণ করলেন শেরপুরের ৬৭ বছর বয়সী আবুল কালাম আজাদ। তিনি এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ২.৯৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।  তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রাবাজ রশিদা বেগম হাইস্কুল থেকে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন।

আবুল কালাম আজাদ শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজীরচর গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ মন্ডলের ছেলে। তিনি তিন ছেলের বাবা। বড় ছেলে কলেজ শিক্ষক। মেজো ছেলে কামিল পাস। ছোট ছেলে প্রকৌশলী। বাবা এবার পাশ করলেন এসএসসি। 

তবে, এসএসসি পাস না করেও তিনি লিখেছেন অসংখ্য কবিতা, ছড়া, উপন্যাস ও গান। এবার কিশোর বয়সের ছেলে-মেয়েদের সাথে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে আলোচনায় এসেছেন তিনি। 

আবুল কালাম আজাদ জানান, তার বয়স প্রায় ৬৭ বছর। তার ছেলেরা শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়েছে, তাই তিনিও পিছিয়ে থাকতে চাননি।  

তিনি বলেন, ছোট থেকেই আমি কবিতা, ছড়া, গান ও উপন্যাস লিখি। ইতোমধ্যে আমার লেখা ‘দেহদাহ’ ও ‘দেশরত্ন’ নামে দুটি কবিতার বই প্রকাশ হয়েছে। এতেও আমি প্রশংসিত হয়েছি

আবুল কালাম আজাদের বাড়ি শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়নের লঙ্গরপাড়া গ্রামে। এলাকায় তিনি ‘কবি কালাম’ নামে পরিচিত। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ১৯৫৫ সালের ১ মার্চ। ১৯৭৬ সালে তিনি দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। ওই বছর তাদের বাড়িতে আগুন লেগে সবকিছু পুড়ে যায়। শুরু হয় আর্থিক সংকট। কাজের জন্য পড়াশোনা আর শেষ করা হয়নি তার। ১৯৯৫ সালে চাকরি নিয়ে সৌদি আরবে চলে যান। প্রবাস জীবন শেষে ২০১৩ সালে শ্রীবরদীর গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি।

দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করার পর এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেননি। সেই দুঃখ তিনি ভুলতে পারেননি।

পরীক্ষায় পাসের পর কেমন লাগছে, জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ছোট ছেলে আরিফুলের কাছ থেকে পরীক্ষায় পাসের খবরটি প্রথম জানতে পারেন তিনি। এসএসসি পাস করতে পেরে তাঁর খুব ভালো লাগছে। এই বৃদ্ধ বয়সে পড়ালেখা করাটা ছিল তার কাছে একটি চ্যালেঞ্জের বিষয়। সেই চ্যালেঞ্জে তিনি প্রাথমিকভাবে জয়ী হয়েছেন। এখন আরও অনেক দূর যেতে হবে।

 

খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দুলাল মিয়া বলেন, স্বশিক্ষিত আবুল কালাম আজাদের এসএসসি পরীক্ষায় পাসের খবর শুনে তিনি ও এলাকার লোকজন খুব খুশি হয়েছেন। বৃদ্ধ বয়সে তার এই কৃতিত্বের জন্য পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৯নভেম্বর/এআর)