পাবনায় আসামিদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে

প্রকাশ | ২৯ নভেম্বর ২০২২, ১৭:২১

পাবনা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

গ্রাম্য বিবাদে পাবনার সুজানগরে হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে আসামিরা জেলহাজতে। এ সুযোগে  বাদীপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে পুরুষশুন্য আসামিদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করছে- এমন অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের জিয়ালগাড়ি ভবানীপুর গ্রামের ঘটনা এটি।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আজাদ ও মোস্তাকের নেতৃত্বে বাদী পক্ষের লোকজন প্রকাশ্যে বসতঘর ভেঙে নেওয়া, জমি থেকে ফসল কেটে নেওয়া, গবাদী পশু নেওয়া ও পুকুরের মাছ পর্যন্ত লুটপাট করছে।

শনিবার (২৬ নভেম্বর) সাংবাদিকরা আসামিদের একাধিক পরিবারের বসতভিটা ঘুরে এমন  চিত্র দেখতে পান। দেখা গেছে, কয়েকটি বসতবাড়ি খালি পড়ে আছে। বাড়ির লোকজন, গৃহস্থালি সামগ্রী কিছুই নেই। যেসব বাড়িতে লোকজন আছেন তাদের চোখে-মুখেও আতঙ্কের ছাপ। এ অবস্থায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে ওই পরিবারগুলো। তারা জানান, ঘরবাড়ি, সংসার সব শেষ হয়ে গেছে। এখন আমাদের কিছুই নেই।

স্থানীয়রা জানান, পূর্ব বিরোধের জেরে জাহাঙ্গীর ও তার এক ভাই মারা যাওয়ার পর আসামিদের বাড়িঘরে ভাঙচুর-লুটপাট চলছেই। মামলার আসামিরা সবাই জেলহাজতে থাকার সুযোগে গরু লুটের পাশাপাশি আসামিদের বাড়ির সকল জিনিসপত্র লুটপাট করেছে বাদীপক্ষের লোকজন।

মামলার আসামি আশরাফ আলীর স্ত্রী শারমিন আক্তার জানান, আমার স্বামী জেল হাজতে আছে। এই সুযোগে বাদীপক্ষের লোকজন আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে ঘরের সবকিছু নিয়ে গেছে। আসামি বাবর আলীর স্ত্রী শিউলি খাতুন জানান, বাদীপক্ষের লোকজন প্রকাশ্যে আমাদের দুইটি পুকুরের সব মাছ মেরে নিয়ে গেছে। মামলার অপর আসামি মো. রফিকের স্ত্রী মোছা .রাশিদা খাতুন বলেন, আমাদের বাড়িতে এসে বাদীপক্ষের লোকজন ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। তবে এ ঘটনায় নিজেদের সম্পৃকতা নেই বলে দাবী করেন বাদী পক্ষের লোকজন। এদিকে হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে আসামিরা জেলহাজতে থাকার পরও তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানোহয়।

এ বিষয়ে সুজানগর থানার ওসি আব্দুল হান্নান জানান,‘ বাড়িঘর লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় দুইটি মামলা হয়েছে। এছাড়া লুট হওয়া গরুগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।’এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো এবং ভাঙচুর ও লুটপাটের একাধিক মামলা হলেও পুলিশের দৃশ্যমান তেমন কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। তাই এলাকাবাসী পুলিশের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

উল্লেখ্য, পূর্ব বিরোধের জের ধরে উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের জিয়ালগাড়ী ভবানীপুর গ্রামে সম্প্রতি দু-পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় টেঁটাবিদ্ধ হয়ে জাহাঙ্গীর আলম এবং পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজন সহ ২ জন মারা যায় ।

এ হত্যার ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে জুবায়ের ২৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে মামলার প্রধান আসামিসহ সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ আদালতে সোপর্দ করে। এ সুযোগে পুরুষশুন্য বাড়িতে প্রায় চলছে ভাঙচুরসহ লুটপাটের ঘটনা। তাই এলাকাবাসী ঊর্ধ্বতন পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/২৯নভেম্বর/এআর)