সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে হিনা রব্বানির কাবুল সফর

প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০২২, ১৭:২০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

আন্তঃসীমান্ত সহিংসতা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার কাবুলে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে দেখা করেছেন। খবর আল-জাজিরার।

তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামাবাদের সঙ্গে আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা উদ্বেগ উত্থাপনের এক মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতি শেষ করার পরদিন মঙ্গলবার তিনি সফর করেন।

পাকিস্তান তালেবান নামে পরিচিত টিটিপি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। সশস্ত্ররা ইসলামিক আইনের প্রয়োগ এবং অন্যান্য বিষয়গুলির মধ্যে তাদের যোদ্ধাদের মুক্তি দাবি করে আসছে গোষ্ঠীটি।

পাকিস্তান তালেবান আফগান তালেবানের চেয়ে ভিন্ন হলেও তারা মতাদর্শগতভাবে এক। সোমবার তারা যোদ্ধাদের সারা দেশে হামলা চালারোর নির্দেশনা দিয়েছিল বলে জানা গেছে।

বুধবার পাকিস্তানে পুলিশের গাড়িতে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে যেখানে পুলিশ সদস্যসহ ৩ জন নিহত এবং ২৩ জন আহত হয়েছে। পাকিস্তান তালেবান এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, ‘যেহেতু বিভিন্ন এলাকায় মুজাহিদিনদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চলছে … তাই সমগ্র দেশে যেখানেই পারেন আক্রমণ চালানো আপনার জন্য অপরিহার্য।’

আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে পাকিস্তান তালেবানকে দায়ী করে আন্তঃসীমান্ত হামলার পর পাকিস্তানে মারাত্মক বিমান হামলা চালানো হয়। এর পর কাবুল এবং ইসলামাবাদ এপ্রিল মাসে কথার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

পাকিস্তান বলেছে, টিটিপি আফগানিস্তানে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে। তবে তালেবান সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এর ফলে পাকিস্তান তালেবান এবং পাকিস্তান সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনার পথ সুগম হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

খার এবং মুতাক্কির মধ্যে বৈঠকে নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা তা পরিষ্কার নয়। এপ্রিল মাসে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কাবুল সফরকারী প্রথম উচ্চ-পর্যায়ের পাকিস্তানি প্রতিনিধিদল এটি। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি গত অক্টোবরে কাবুল সফর করেন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, আঞ্চলিক সংযোগ, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ এবং আর্থ-সামাজিক প্রকল্পে সহযোগিতাসহ অভিন্ন স্বার্থের বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুত্তাকি ত্বরান্বিত বাণিজ্য ও ট্রানজিট এবং দুই দেশের মধ্যে ভ্রমণকারীদের সুবিধার পাশাপাশি পাকিস্তানে আফগান বন্দীদের মুক্তির কথাও তুলে ধরেছিলেন।

পাকিস্তান এই মাসে বেলুচিস্তানকে আফগান প্রদেশের কান্দাহারের সঙ্গে সংযোগকারী একটি প্রধান ক্রসিং চমন সীমান্ত পুনরায় খুলে দিয়েছ। সীমান্তটি দুই পক্ষের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

দক্ষিণ-পশ্চিমে চমন সীমান্ত এবং উত্তর-পশ্চিম তোরখাম সীমান্ত স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তানকে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এটি দুই দেশের মধ্যে প্রধান বাণিজ্য ও ট্রানজিট রুট হিসেবে কাজ করে।

(ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/ এসএটি)