কর্ণফুলী পেপার মিলে টেন্ডারের নামে নানা অনিয়ম-বৈষম্যের অভিযোগ
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বৃহত্তম কাগজকল ঐতিহ্যবাহী কর্ণফুলী পেপার মিলস্ লিমিটেডের টেন্ডারের নামে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে সাতকানিয়ার ব্যবসায়ী মো. ছরওয়ার কামাল অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত বছরের ৮ আগস্ট চট্টগ্রামের সদরঘাট রোডে অবস্থিত কর্ণফুলী পেপার মিলে 'রিসাইক্লিং পেপার (অকেজো কাগজ) পরিবহনের জন্য দরপত্র' শীর্ষক দরপত্র আহ্বান করা হয় । যার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে গত বছরের ২৫ আগস্ট কর্নফুলী পেপার মিলে ট্রাক দ্বারা অকেজো কাগজ পরিবহন করার জন্য একটি দরপত্র দাখিল করেন।
দরপত্রে উল্লেখ আছে ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কর্ণফুলী পেপার মিলস লি. কর্তৃক দেশের বিভিন্ন বিভাগের সকল জেলা- উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে অব্যবহৃত/ বাতিল কাগজ ও বই সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উপযুক্ত প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ওজন করে ট্রাক বোঝাই পূর্বক কর্ণফুলী পেপার মিলস লি., চন্দ্রঘোনার ভান্ডার পর্যন্ত ট্রাক দ্বারা পরিবহনের জন্য এই দরপত্র আহ্বান করা হয়।
২০২১ শিক্ষাবর্ষের প্রাক প্রাথমিক শ্রেণি, প্রাথমিক স্তর এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উদ্বৃত্ত (পুরাতন/ অব্যবহৃত) পাঠ্যপুস্তক/ অকেজো কাগজগুলো সংগ্রহ করে কর্ণফুলী পেপার মিলস্ লি.- এ দেওয়ার যে দরপত্র আহ্বান করেছেন তাতে দরখাস্ত ও অভিযোগকারীর গড় দর প্রতি টন ৯০৬/- টাকা হারে দাখিল করেন।
অভিযোগকারীর মোট ৬০০ টনে ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৬০০ টাকার ১০% হারে ৫৪ হাজার ৩৬০ টাকা নিরাপত্তা হিসেবে আসে।
তিনি অভিযোগে বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সেখানে দেখা যায় সৌরভ পেপার স্টোর নামীয় একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে অবাস্তব একটি দর দাখিল করেন। সেই দরটি হল প্রতি টন ১ বা ২ টাকা। উক্ত দর অবাস্তব ও সংগতিপূর্ণ নয় এবং দরপত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক । কর্ণফুলী পেপার মিলস্ লি. এর কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে এই দর দাখিল করা হয় । কর্ণফুলী পেপার মিলস্ লি. ৬০০ মেট্রিক টন কাগজ প্রতি মেট্রিক টন ১৫০০ টাকা দরে ক্রয় করলে মোট মূল্য দাড়াঁয় ৯ রাখ টাকা । সেখানে সৌরভ পেপার স্টোর সর্বমোট দরপত্র দাখিল করেন মাত্র ৯ টাকা। তার জামানত আসে ১০% হারে মাত্র ০.৯ পয়সা মাত্র। যা সম্পূর্ণ অবাস্তব ও অকল্পনীয় হিসেবে ধরে নেয়া যায়। অভিযোগকারী মনে করেন, এখানে পুকুর চুরির পাঁয়তারা চলছে। যার সঙ্গে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কিছু অসাধু কর্মকর্তা সরাসরি জড়িত রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয় । এটি টেন্ডারের নামে আইওয়াশ বা টেন্ডার জালিয়াতির চাঞ্চল্যকর ঘটনা হয়। যা তদন্ত করে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেড়িয়ে আসবে। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের আড়াল করে অভিনব পন্থায় ভুয়া টেন্ডারের মাধ্যমে অর্থ লোপাট করছে। সর্বমোট ৬ জন টেন্ডারকারীর মধ্যে কথিত সর্বনিম্ন (?) দরদাতা দেখিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির বাণিজ্য হতে যাচ্ছে প্রতীয়মান হয়।
উল্লেখ্য যে, তদন্ত সূত্রে জানা যায়, পতারণার মাধ্যমে অনেকে পুরাতন কাগজ বিক্রেতা কর্নফুলী পেপার মিলসের প্রতিনিধি সেজে ঠিকাদার কার্যাদেশ সংগ্রহ করে কর্ণফুলী পেপার মিলসের বাহিরে পেপার বিক্রি করে ফেলে ।
এছাড়াও দেশের বিভিন্ন শিক্ষা অফিসে গড়ে ১৫-২০ টন কাগজ থাকা সত্ত্বেও তাহারা ২০০-৩০০ কেজি দেখিয়ে বাকি কাগজ আত্মসাৎ করে বাইরে বিক্রি মর্মে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় ।
এ ধরনের দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও অব্যবস্থপনার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি মানবাধিকার সংগঠন বিএইচআরএফ বরাবরে আইনি সহায়তা চান, বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস্ ফাউন্ডেশনের কাছে। অভিযোগকারী ন্যায় ও সুবিচারের স্বার্থে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযোগটি দুদক কার্যালয় চট্টগ্রামসহ সরকারের যথাযত কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করে ।
(ঢাকাটাইমস/১ডিসেম্বর/এআর)