চড়া বাজারে একটু স্বস্তি সবজিতে

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

চাল, আটা, ময়দা, তেল, মাছ, মাংস ও ভোজ্যতেলের বাজারে নেই স্বস্তি। এখনো চড়া রয়েছে অনেক পণ্যের দাম। তবে সবজির বাজারে এতদিনকার অস্থিরতা আর নেই। রাজধানীর বাজারে গড়ে ৬০ শতাংশ কমেছে সবজির দাম।

শুক্রবার সকালে পশ্চিম রামপুরা, হাতিরপুল কাঁচাবাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

সরজমিনে ঘুরে জানা গেছে, শীতের মৌসুম শুরু হতেই সবজির সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে রাজধানীর বাজারে। ফলে নগরবাসী কিছুটা স্বস্তিতে শাকসবজি কিনতে পারছেন। বিক্রেতারা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে সরবরাহ আরও বাড়বে, কমবে দামও।

পশ্চিম রামপুরা এলাকার কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা মিন্টু সিকদার ঢাকা টাইমসকে জানান, বাজারে এখন সাড়ে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ৫২০ টাকা, ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৭৫০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৮৫০ টাকা এবং ৯০০-৯৫০ গ্রামের ওজনের ইলিশ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা বিক্রি করছি।

তিনি বলেন, ‘মাছের দাম কমেওনি বাড়েওনি, আগের মতোই রয়েছে। তবে কমার সম্ভাবনা রয়েছে।’

বাজার ঘুরে জানা গেছে, দুই কেজি ওজনের নদীর পাঙ্গাশ ৬০০ টাকা, ছোট পাঙ্গাশের কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, রুই মাছ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছোট বোয়াল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, ছোট টেংরা ৪০০ টাকা কেজি, টাকি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছোট কাতল ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, শোল মাছ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, ছোট রূপচাঁদা প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা, ছোট কাঁচকি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

হাতিরপুল এলাকার সবজি বিক্রেতা মিন্টু রায় ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সবজির দাম অনেক কমেছে। আগামী সপ্তাহে আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে। সবজির দাম কম হওয়ায় কাস্টমারও খুশি আমরাও খুশি।’

বাজারে এখন নতুন আলু ৫০ থেকে ৬০ টাকা, যা ১০ দিন আগে ১৬০ টাকায় বিক্রি করেছি। প্রতি কেজিতে ৯০-১০০ টাকা কমেছে। প্রতি কেজি শিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ফুলকপি প্রতিটি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৪০ টাকা ছিল।

বাজারে এখন গোল বেগুন প্রতি কেজি ৪০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, প্রতি কেজি শালগম ৫০ টাকা।

এছাড়া বরবটি প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৩০-৫০ টাকা, ধনে পাতা ২৫০ গ্রাম ২০ টাকা, পাঁকা টমেটো ১২০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, দেশি গাজর ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, ডায়ামন্ট আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা, মুলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, লেবু ১৫ থেকে ২০ টাকা হালি, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, জালি কুমরা প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, প্রতিটি বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

হাতিরপুল এলাকার সবজি বিক্রেতা মিন্টু রায় ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সবজির দাম অনেক কমেছে। আগামী সপ্তাহে আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। দাম কম হওয়ায় কাস্টমারও খুশি আমরাও খুশি।’

পশ্চিম রামপুরা এলাকার নবী রাইস স্টোরে মালিক সাইফুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘পাইজাম চাল প্রতি কেজি ৫৮ টাকা, আটাশ চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৭৫ টাকা, হাসকি ২৯ প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি করছি।’

ওয়াপদা রোড এলাকার মাশাআল্লাহ গোস্ত বিতানের মালিক মো. বিল্লাল হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘২০ টাকা কমে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৮০ টাকায় বিক্রি করছি। ১০ দিন আগে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকায় বিক্রি করেছি। গরুর মাথা প্রতি কেজি ৪০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে খাশির মাংস ১ হাজার টাকা।’

এ দিকে বাজারে কমেছে ডিমের দাম। প্রতিটি ডিম ১০ টাকা, এক হালি ৪০ টাকা আর ডজন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত ১৫ দিনের তুলনায় হালিতে ১০ টাকা কমেছে। তবে হাসের ডিম প্রতিটি ১৮ টাকা, হালি ৭০ টাকা এবং ডজন ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, পাকিস্তান মুরগি ২৬০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকানে নাটোরের দেশি রশুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা, রাজশাহীর পেঁয়াজ ৫০ টাকা, ইন্ডিয়ান শুকনা মরিচ ৫০০ টাকা, যা তিন মাস আগে ৩০০ টাকা ছিল।

এছাড়া দেশি ডাল ১৪০ টাকা, ইন্ডিয়ান মসুর ডাল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা, আদা দেশি ১২০ টাকা, খোলা চিনি ১২০ টাকা, প্যাকেট চিনি ১২৫ টাকা, প্যাকেট আটা ৭০ টাকা, প্যাকেট ময়দা ৮০ টাকা ও খোলা আটা ৬৫ টাকা, খোলা ময়দা প্রতি কেজি ৭৫ টাকায় বিক্রি যাচ্ছে।

বাজারে ভোজ্যতেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৯২৫ টাকায়।

পশ্চিম রামপুরা এলাকার কাঁচাবাজারে আসা ক্রেতা মিনহাজুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘কিছুটা স্বস্তি সবজিতে পাচ্ছি। তবে শীতের সবজির দাম আরও কম থাকার কথা। আশা করছি আগামী সপ্তাহে আরও দাম কমবে।’

মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘শীতে গ্রাম অঞ্চলে সবজির চাষ হয় বেশ ভালো। তবে ব্যবসায়ীরা যদি ধান্ধাবাজি বন্ধ করে দেয় আশা করি সবজিসহ আরও অনেক পণ্যের দাম কমবে।’

(ঢাকাটাইমস/০২ডিসেম্বর/পিআর/এফএ)