ক্ষোভে মঞ্চ ছাড়লেন ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চার আ.লীগ নেতা

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮:৩৫ | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯:১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের সম্মেলনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। ব্যানার ফেস্টুন ও পছন্দের পদপ্রত্যাশীদের নিয়ে স্লোগানে বিরক্ত হয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এমনকি ছাত্রলীগ নেতাদের কারণে বক্তব্য দিতে সময় পাননি আমন্ত্রিত অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতা। এতে আয়োজকদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে মঞ্চ ছেড়েছেন ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতা।

ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসে এই প্রথম দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের সম্মেলনে এসে বক্তব্য দিতে না পেরে মঞ্চ ছেড়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

শুক্রবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের সম্মেলনে এ ঘটনা ঘটে। সকাল ১০টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এক ঘণ্টা দেড়িতে শুরু হয় সম্মেলন।

সম্মেলন শুরুর পর ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা বক্তব্য দেন। তাদের দীর্ঘ বক্তব্যের কারণে জুমার নামাজের সময় ঘনিয়ে আসে। এরপর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেন। জুমার সময় হয়ে যাওয়ায় তিনি বক্তব্যে ছাত্রলীগ নেতাদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন। 

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতা সভাপতিমণ্ডলির সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজ্জামেল হক। কিন্তু তাদের কেউই বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাননি।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে এসে আরও বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাননি আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। এছাড়া সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যও বক্তব্য দিতে পারেননি।

সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসে এই প্রথম দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের সম্মেলনে এসে বক্তব্য দিতে না পেরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে থেকে চলে গেছেন। ছাত্রলীগ নেতাদের এমন জ্ঞানহীন কাণ্ড মেনে নেওয়া ঙযায় না। যে মঞ্চে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা বসে আছেন সেখানে কেন ছাত্রলীগের নেতারা ঘন্টার পর ঘণ্টা বক্তব্য দিয়ে সময় নস্ট করবে। বর্তমার ছাত্রলীগের কার্মকান্ড প্রথম থেকেই প্রশ্নবৃদ্ধ ছিল। শেষ সময় এসেও সেই বির্তক ঘোচাতে পারলো না, যা খুবই দুঃখজনক।

খোজঁ খবর নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলন সকাল ১০টায় উদ্বোধনের কথা থাকলেও এক ঘণ্টা পরে তা শুরু হয়। উদ্বোধন হওয়ার পরে দীর্ঘ এক ঘণ্টায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অথাৎ বিদায়ী কমিটির চার নেতা বক্তব্য দেন। তাদের বক্তব্য শেষে শুক্রবার হওয়ায় জুমার নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই অন্য আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে বক্তব্যের সুযোগ না দিয়ে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেন। এ সময় ব্ক্তব্য দিতে না পেরে ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতা মঞ্চ ত্যাগ করেন।

এসময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে তার বক্তব্যে বলেন, সব পোস্টার নামান, স্লোগান বন্ধ, স্লোগান বন্ধ। কোনো স্লোগান দেওয়ার দরকার নেই।

ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো শৃঙ্খলা নেই! পোস্টার নামাতে বলছি, নামায় না! এটা কী ছাত্রলীগ, তারা কোন ছাত্রলীগ করে, নিয়ম শৃঙ্খলা নেই। আজ সম্মেলনে দেখি সবই নেতা, তাহলে কর্মী কোথায়! যে ছাত্রলীগ নিয়ম শৃঙ্খলা মানে না এই ছাত্রলীগ আমার চাই না।

তিনি বলেন, আমরা চাই নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলবে এবং শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ। যারা নিময় কানুন মানবে তাদের চাই না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেকেই মুজিব কোট পরেন। কিন্তু মুজিব কোট পরলেই মুজিব সৈনিক হওয়া যায় না। মুজিব সৈনিক হতে হলে মুজিবের আদর্শের সৈনিক হতে হবে, শেখ হাসিনার খাঁটি কর্মী হতে হবে। যারা বঙ্গবন্ধু আর্দেশের কর্মী দলের খাঁটি কর্মী তারা কখনো নিয়ম নীতি ভঙ্গ করে না।

ঢাকাটাইমস/০২ডিসেম্বর/জেএ/ইএস