আমরা জাতীয় সংগীত গাই অথচ ময়লাটা রাস্তায় ফেলি: মেয়র আতিক

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ২০:৫৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

শহরকে ভালোবাসতে সবাইকে এগিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘আমরা ঠিকই জাতীয় সংগীত গাই—‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। অথচ ময়লাটা রাস্তায় ফেলে দিই। লালবাতি জ্বলার পরেও আমরা রাস্তায় গাড়ি চালাই। হর্ন বাজিয়ে ‍শহরের পরিবেশ নষ্ট করি। তাই আসুন সবাই শহরকে ভালোবাসি। শহরের পরিবেশ রক্ষায় হর্ণ বাজানো বন্ধ করি।’

শুক্রবার রাজধানীর গুলশানের ৬০, ৬১ ও ৬২ নম্বর সড়কে পাড়া উৎসব উদ্বোধন এসে তিনি এসব বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

প্রতিবেশীদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আতিক বলেন, ‘শহরে দেখা যায় প্রতিবেশীরা এক ভবনে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেও কেউ কাউকে সেভাবে চেনেন না। নিজেদের মধ্যে কোননো যোগাযোগ নেই। তাই সবার সঙ্গে পরিচিত হতে এবং সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে এই পাড়া উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। পাড়া উৎসব প্রতিবেশীদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন ও সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাড়া উৎসবকে ছড়িয়ে দিতে চাই পুরো ঢাকা শহরে। পর্যায়ক্রমে ঢাকা শহরের সব এলাকাতেই পাড়া উৎসব আয়োজন করা হবে।'

ডিএনসিসি মেয়র এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বিভিন্ন প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন ও বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় ডিএনসিসি মেয়র বিভিন্ন খেলায় অংশ নেন এবং গান গেয়ে নগরবাসীর সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

মেয়র বলেন, ‘আজকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে গুলশানের সবার বাসায় বসে থাকার কথা ছিল। কিন্ত আজ সবাই বাসা হতে বেরিয়ে এসে এ উৎসবে যোগ দিয়েছে। তারা একে অন্যকে জিজ্ঞেস করছে তুমি কই থাকো। এই মিলনমেলার মাধ্যমে একটি বন্ধন তৈরি হয়েছে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, 'উন্নত বিশ্বের মতো ঢাকায়ও সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এই আয়োজনটি গ্রামের উৎসব ঢাকা শহরে ফিরে নিয়ে এসেছে৷ এখানে কোনো প্রতিযোগিতা নেই আছে শুধু হৃদ্যতা৷ প্রতিবেশীদের সঙ্গে সৌহার্দপূর্ণভাবে বসবাস করতে এধরনের উৎসব আয়োজন ভূমিকা রাখবে৷

বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম উৎসবে আগত বাসিন্দাদের উদ্দেশ্য খোলা ট্রাকে এডিস মশার উৎসস্থলের প্রদশর্নীর মাধ্যমে ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।

এদিকে ডিএনসিসির সহযোগিতায় দ্বিতীয় বার এই পাড়া উৎসবের আয়োজন করে গুলশান সোসাইটি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিরোস ফর অল।

শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ উৎসবে ছিল দেশীয় পিঠার স্টল, বায়োস্কোপ, পুতুল নাচ, ম‌্যাজিক শো, স্বাস্থ‌্য সেবা স্টল, পাটের তৈরি পণ‌্য। এছাড়া আরও ছিল উইশ বোর্ড, শিশুদের ছবি আঁকার ক্যানভাস ও রং তুলি, ক্যারাম বোর্ড, দাবাসহ নানা ধরনের খেলার সামগ্রী।

পাড়া উৎসবে বাসিন্দাদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে অংশ নেয় বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ।

এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমান প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/০২ডিসেম্বর/কেআর/ইএস)