ঢাবি ছাত্রলীগের সম্মেলন আজ, নেতৃত্বে আলোচনায় যারা

প্রকাশ | ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রভূমি খ্যাত ঢাবি শাখার সম্মেলনে শীর্ষ নেতৃত্বে কারা আসবেন তা নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। মেলানো হচ্ছে নানা সমীকরণ। এক্ষেত্রে পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড ও শিক্ষার্থীবান্ধবরা এগিয়ে আছেন বলে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই এক বছর মেয়াদে দায়িত্বে আসার পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতেই প্রায় ১০ মাস সময় নেন তারা। আর হল কমিটিহসমূহ করেছেন মেয়াদ শেষ হওয়ার আড়াই বছর পর।

তাদের দেওয়া হল কমিটিগুলোতে চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত, ছাত্র নির্যাতনকারী, ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের দায়ে বহিষ্কৃত এবং মাদকসেবীদের স্থান পাওয়ার অভিযোগ আছে। এদের মধ্যে থেকে কারও নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনা কম।

কারা নেতৃত্বে আসতে পারবেন সেটি স্পষ্ট করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। তিনি বলেছেন, যারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করেন, পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, বিতর্ক মুক্ত, সৎ এবং যোগ্য তাদেরকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে।

এদিকে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব নির্বাচনে ছাত্রত্ব এবং বয়সের ব্যাপারটিও গুরুত্ব দেওয়া হবে। বেশ কয়েক দিন আগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রত্বের ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছেন। তিনি জানতে চান-কত বছরে একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করতে পারেন। জবাবে ছাত্রলীগের এই দুই নেতা আওয়ামী লীগ প্রধানকে বলেন, ২৫ বা ২৬ বছরেই শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব গঠনে এই বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে।

আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে আঞ্চলিকতার প্রাধান্যও থাকবে। সেক্ষেত্রে বৃহত্তর ফরিদপুর, বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলের প্রাধান্য পাবে। কেননা বিগত কয়েকটি কমিটির তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই অঞ্চলের প্রার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন। এর বাইরে উত্তরবঙ্গ, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ-ঢাকা অঞ্চলেরও প্রার্থীদের বিবেচনা করা হবে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান ও বিতর্কমুক্তদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। এছাড়া করোনাকালে যেসব নেতা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেবায় নিয়োজিত ছিল এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভুক্তভোগীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সেবা পৌঁছে দিয়েছে তাদেরও বিবেচনায় রাখা হবে।

এসব বিবেচনায় এবারের বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বের আলোচনায় আছেন- সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের সভাপতি তানভীর শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক মিশাত সরকার, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের সভাপতি শহিদুল হক শিশির, সাধারণ সম্পাদক মো. হোসেন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন, স্যার এফ রহমান হলের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ হলের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ রহমান, ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন নাইম, সূর্যসেন হলের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমান, জসীম উদ্দিন হলের সভাপতি মো. সুমন খলিফা, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত, বিজয় একাত্তর হলের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুস।

এর বাইরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-সমাজ সেবাবিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, উপ-গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক সাইফুল্লা আব্বাসী অনন্ত, ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক তামজিদ হোসেন তামিম, উপ-পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক শাকিল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ফরিদা পারভীন, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক উপ-সম্পাদক রনক জাহান রাইন, রোকেয়া হলের সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইনও প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে আছেন।

(ঢাকাটাইমস/০৩ডিসেম্বর/ইএস)