সাত শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড দিল মিয়ানমারের জান্তা সরকার
প্রকাশ | ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:০৯ | আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:২১
মিয়ানমারের জান্তা সরকার এই সপ্তাহে আরও অন্তত সাতটি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। জাতিসংঘের মতে, এ নিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৯। খবর এএফপির।
মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণের তথ্য যাচাই করতে জান্তা সরকারের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে এএফপি।
জাতিসংঘ সরকারের বিরুদ্ধে ‘বিরোধী দলকে দমন করার একটি হাতিয়ার’ হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির বেসামরিক সরকার পতনের পর থেকে বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটি। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে বলেছেন, বুধবার বন্ধ দরজার পিছনে একটি সামরিক আদালত কমপক্ষে সাতজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
তুর্ক আরও বলেছেন, ‘বিরোধিতাকে দমন করার জন্য একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ব্যবহার করার মাধ্যমে সামরিক বাহিনী আসিয়ান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহিংসতা বন্ধ করার প্রচেষ্টার প্রতি তার ঘৃণার বিষয়টি নিশ্চিত করে। এছাড়াও সামরিক বাহিনীর দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ফলে সৃষ্টি হওয়া সংকট মিয়ানমারকে রাজনৈতিক সংলাপে যেতে বাধ্য করে।
স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, ইয়াঙ্গুনভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এপ্রিল মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং তাদের বিরুদ্ধে একটি ব্যাংকে বন্দুক হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
ড্যাগন ইউনিভার্সিটির ছাত্র ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ছাত্রদের ওপর মৃত্যুদণ্ড আরোপ করা সামরিক বাহিনীর প্রতিশোধমূলক কাজ।’ বৃহস্পতিবার চার যুব কর্মীকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনের তদন্ত করছে জাতিসংঘ।
তুর্ক বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী সুষ্ঠু বিচারের মৌলিক নীতিমালা লঙ্ঘন করে এবং স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতার মূল বিচারিক গ্যারান্টির বিপরীতে গোপনীয় আদালতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। গোপন আদালতের শুনানি কখনো কখনো কয়েক মিনিট স্থায়ী হয় এবং আটক ব্যক্তিদের প্রায়ই আইনজীবী বা তাদের পরিবারের কাছে অ্যাক্সেস থাকে না।’
মিয়ানমারের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা ‘স্টপ এক্সিকিউট স্টুডেন্টস’-এর মতো হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। জুলাইয়ে সর্বশেষ চার বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে যার মধ্যে প্রাক্তন আইন প্রণেতা ফিও জেয়া থাও এবং গণতন্ত্র কর্মী কিয়াও মিন ইউ রয়েছেন।
মিয়ানমারে প্রায় তিন দশকের মধ্যে এটাই প্রথম মৃত্যুদণ্ড। বিশ্বব্যাপী মিয়ানমারের এমন কর্মকাণ্ডের নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশনস, যেটি মিয়ানমারে শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য এখন পর্যন্ত নিষ্ফল প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিয়েছে, আগস্টে জান্তাকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিল।
স্থানীয় পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর মতে, ভিন্নমত দূর করার জন্য সামরিক জান্তার অভিযানের অংশ হিসেবে প্রায় ২ হাজার ২৮০ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে এবং ১১ হাজার ৬৩৭ জন এখনো আটক রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৩ডিসেম্বর/ এসএটি)