নয়াপল্টন নিয়ে ‘নমনীয়’ বিএনপি সমাবেশের স্থান নিয়ে বিকল্প প্রস্তাব এলে ভাববে

প্রকাশ | ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:৫৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ আয়োজনের স্থান নিয়ে সরকার ‘সর্বনাশা প্রতিশোধস্পৃহায়’ মেতে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এতদিন ধরে রাজধানীর নয়াপল্টনেই সমাবেশ করা হবে বলে এলেও এবার এই স্থানটির বিষয়ে নিজেদের অবস্থানে ‘নমনীয়’ বিএনপি। তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আর তুরাগ তীরেও সমাবেশ করবে না দলটি।

এই দুটি জায়গা ব্যতীত রাজধানীতে অন্য কোনো স্থানের বিকল্প প্রস্তাব দিলে বিএনপি সেটি বিবেচনা করবে করবে বলে মির্জা ফখরুল রবিবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসে জানিয়েছেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যেকোনো স্থানে সমাবেশ করবো এটা আমার সাংবিধানিক অধিকার, এটা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। সেখানে আগ বাড়িয়ে নাশকতা হবে বলে আমার সাংবিধানিক অধিকারকে আপনারা লঙ্ঘন করছেন কেড়ে নিচ্ছেন। আমরা ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করব সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে।’

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করছেন। দয়া করে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করবেন না। আমরা যে নয়টি সমাবেশ সম্পূর্ণ করেছি ঠিক একইভাবে ঢাকার সমাবেশ সম্পূর্ণ করব।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির উদ্যোগে ঢাকা বিভাগীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার এক সর্বনাশা প্রতিশোধস্পৃহায় মেতে উঠেছে। সমাবেশকে নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার জন্য একের পর এক চক্রান্তজাল বিস্তার করে চলেছে। আওয়ামী সরকারের হাতে কখনোই গণতন্ত্র সুরক্ষিত থাকেনি। এদের ইতিহাস ঐতিহ্যে রয়েছে গণতন্ত্রের বিনাশ ঘটিয়ে কর্তৃত্ববাদী শাসনের উত্থান।’

ঢাকার গণসমাবেশকে বানচাল করার জন্য সরকারের নানামূখী দমননীতি এখন সর্বসাধারণের নিকট পরিস্কার হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বাসার সামনে সেই বালির ট্রাকের কায়দায় চেকপোষ্ট-ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ অবরোধ করে রেখেছে।’

‘এটি দেশনেত্রীর ওপর নিপীড়নের আরেকটি নতুন মাত্রা। আমি সরকারের এহেন ঘৃণ্য আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একজন জনপ্রিয় নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েসি রায়ে কারারুদ্ধ রেখে চিকিৎসার সকল পথরুদ্ধ করে প্রতিনিয়ত প্রাননাশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী সরকার। তাঁর বাসভবন অবরোধ করে এবং জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।’

খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে থেকে চেকপোষ্ট ও ব্যারিকেড তুলে নেওয়ার জোর দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।

আইজিপির বক্তব্যের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পুলিশের আইজি বলছেন, ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশকে ঘিরে নাশকতার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তাহলে কেন এই অভিযান নাটক? সরকার এক সুদূরপ্রসারী অশুভ মাস্টারপ্ল্যানের পথে হাঁটছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ইতোমধ্যেই জনগণের নিকট সুষ্পষ্ট হয়েছে যে, সরকার একটি নাশকতামূলক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। কিন্তু সরকারের এতে কোনো লাভ হবে না। জনগণ দিবালোকের মতোই সবকিছু অবলোকন করছে।’

বিএনপির গণসমাবেশকে ঘিরে বিএনপি নেতাকর্মীদের পিছনে সর কার পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশেও পুলিশ গ্রেপ্তার ও হয়রানি করেছে, পথে পথে বাধা দিয়েছে। যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সহিংস রক্তাক্ত আক্রমণ চালিয়েছে, তারপরেও জনতার স্রোতকে ঠেকাতে পারেনি।’

সরকার জঙ্গিবাদের কথা বলে জঙ্গি সৃষ্টি করতে চায়, অগ্নি সন্ত্রাসের কথা বলে, অগ্নি সন্ত্রাস করতে চায় বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/০৪ডিসেম্বর/ডিএম)