বিএনপির রাজশাহীর সমাবেশ কি সফল হয়েছে?

প্রকাশ | ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৭:১০

এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন

নামধারী রাজনৈতিক দল বিএনপির ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসাবে রাজশাহীতেও সমাবেশ হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যান্য প্রান্তে সাম্প্রতিক সময়ে তারা লোক সমাগম ঘটাতে সক্ষম বলেও রাজশাহীতে এসে তা পারেনি। অথচ, রাজনৈতিক জনশ্রেণি খুব ভালো করে জানে স্বাধীনতাবিরুদ্ধ শক্তির একটা জোরালো সমর্থন রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোরজুড়ে রয়েছে। কিন্তু ৩ ডিসেম্বর তাদের জনসমাবেশ কার্যত সফল হয় নাই। এই সভায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয় নাই।

৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত একটি প্রতিবাদ সভাতেও আমি বলেছি যে, ‘রাজশাহীতে যে সমাবেশ বিএনপি আহ্বান করেছিল, যার জন্য গত কয়েকদিন থেকে তাদের নানা রকম প্রচার-প্রচারণা ছিল, প্রচুর লোক হবে, কয়েক লাখ মানুষ ও নেতাকর্মী সমবেত করবে।’ এক্ষেত্রে বিএনপি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। কারণ মাদ্রাসা মাঠ পূর্ণ হতে খুব বেশি মানুষ লাগে না, সেখানে প্রায় ২৫ হাজারের মতো মানুষ হলে মাঠটি কানায় কানায় ভরে যায়, আশেপাশে রাস্তা মিলে ৫০ হাজার মানুষ লাগে পূর্ণ হতে।

কিন্তু আমরা ড্রোনে তোলা ছবিতে দেখেছি, বিএনপির সমাবেশের মাঠটি ছিল ফাঁকা ফাঁকা। তাদের দলের নেতাকর্মী যারা বাইরে থেকে এসেছেন, তারা হয়তো ছিল, কিন্তু স্থানীয় নেতাকর্মীরা সেইভাবে অংশ নেননি। সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ তো ছিলই না। তাদের চলমান সমাবেশ আয়োজনের যে আয়োজন চলছে, এই প্রথম রাজশাহীতে তারা সমাবেশটিকে বড় করতে পারেনি।

ডিসেম্বর, বিজয়ের মাস। এই মাসে রাজনৈতিক অপশক্তি হিসাবে খ্যাত বিএনপির কোনো ধরণের নাশকতা গ্রহণ করার মত বাস্তবতায় নেই দেশবাসী। অবশ্যই সভা সমাবেশ করাটা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য, আমরা সেভাবেই দেখেছি, দেখতে চাই। কিন্তু ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নিয়ে যা তারা বলছে বা করছে, তাতে করে তাদের উদ্দেশ্য যে ভিন্ন তা প্রমাণিত হয়।

অনেক আগে থেকেই বলছি, তারা নতুন বছরে তাদের আসল রূপ নিয়ে হাজির হবে। এই সকল সমাবেশ করার মধ্য দিয়ে তারা একটি বিদেশি অপশক্তিকে দেখাতে চাইছে যে, তাদের শক্তি আছে। কিন্তু সত্য বলতে তাদের প্রতি সাধারণ মানুষের কোনো ধরণের সমর্থন নেই।

রাজশাহীবাসীকেও আমি ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এই সমাবেশে দলে দলে যোগদান করেনি। মানুষ ৩ ডিসেম্বরের সমাবেশকে প্রত্যাখান করেছে। এদিকে ৪ ডিসেম্বর চিটাগাংয়ে পলোগ্রাউন্ডে মানুষের যে ঢল নেমেছে উৎসবের আমেজে, এতে করে প্রমাণ হয় শেখ হাসিনায় আস্থা রেখেছে বাংলাদেশ।

সাংগঠনিক দক্ষতায় বিএনপির মত রাজনৈতিক দলের জনস্বার্থহীন পথচলাকে রুখতেও হবে। বিএনপির নেতৃত্বে দণ্ডিত যে দুই শীর্ষ নেতা রয়েছেন, তাদের মাধ্যমে রাজনীতি করতে পারছে না তারা। খুব শিগগিরই দলটির অস্তিত্ব নিয়ে টান পড়বে। প্রদীপ নিভে যাওয়ার আগে একটু জ্বলে ওঠার চিরন্তন দিক আছে। বিএনপি হলো সেই তামাটে শক্তির অশুভ অগ্নি, একটু জ্বলে নিভে যাবে এবং মাঝখান দিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষয়ক্ষতি করবে। সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

লেখক: সভাপতিমন্ডলির সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ